টপ নিউজ ডেক্সঃ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে অসাধারণ এক অসাধারণ ফুটবলই উপহার দিয়েছে দুই দল। রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগটা ৪–৩ গোলে জিতে, তাই ম্যানচেস্টার সিটি কোচ পেপ গার্দিওলার স্বস্তি হওয়ারই কথা। যদিও স্কোরলাইন নিয়ে মনের কোণে এক ধরনের খচখচানি থাকাটা অস্বাভাবিক না, তারপরেও গার্দিওলার কাছে দর্শকদের মনের খোরাক হিসেবে ম্যাচটা হয়েছে যুতসই। সাত গোলের অসাধারণ রোমাঞ্চ তো আর প্রতিদিন দেখা যায় না!
ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটি দুই গোলের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল দুইবার। লীগের ইতিহাসে সেমিফাইনালে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো দুই দলের তিনটি করে গোল করার ঘটনা ঘটল। এর আগে ১৯৯৯ সালে বায়ার্ন মিউনিখ আর দিনামো কিয়েভের মধ্যকার সেমিফাইনাল ম্যাচে এমন কিছু ঘটেছিল। ম্যানচেষ্টার সিটি কাল যেভাবে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দিয়েছে, সেটি তাদের কোচকে খুশি করবেই।
বিটি স্পোর্টসে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচটি ম্যানচেস্টার শহর ও সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সিটির ভক্তদের জন্য দারুণ গর্বের ছিল। নিজ দলের পারফরম্যান্সের দারুণ খুশি গার্দিওলা। সিটি বস সবচেয়ে বেশি খুশি তাঁর দলের সুযোগ তৈরির ব্যাপারটিতে, ‘আমরা বল নিয়ে অথবা বল ছাড়া যা করেছি, তা দুর্দান্ত। আমরা সুযোগ তৈরি করেছি। গোল করেছি। আমি আর কী চাইতে পারি আমার দলের কাছে। আমি এখন আমার খেলোয়াড়দের পুরো বিশ্রাম করতে বলেছি। দুই দলই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে, খেলাটাও হয়েছে দুর্দান্ত। চোখের জন্য আরামদায়ক একটা খেলা হয়ে গেল।
পেপ রিয়াল মাদ্রিদ ও তাদের কোচ কার্লো আনচেলত্তিকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি, ‘আমি রিয়াল মাদ্রিদ ও তাদের কোচ আনচেলত্তিকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই। মাঠে তারা অসাধারণ খেলেছে। একই সঙ্গে একটা জিনিস আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা রিয়াল মাদ্রিদের সম পর্যায়ের দলই। উল্লেখ্য, ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই কেভিন ডি ব্রুইনার গোলে এগিয়ে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। দশ মিনিটের মধ্যেই গ্যাব্রিয়েল জেসুস স্কোরলাইন করে দেন ২–০। খেলা তো সেখানেই শেষ! কিন্তু প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ বলেই হয়তো দুই গোলে এগিয়ে গিয়েও স্বস্তিতে ছিলেন না গার্দিওলা।
৩৩ মিনিটে করিম বেনজেমার গোলে ম্যাচে ফেরার পথ খুঁজে নেয় রিয়াল। যদিও ৫৩ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় জেসুসরা্। এবার গোল করেন ফিল ফোডেন। ৫৫ মিনিটে মাদ্রিদের ভিনিসিয়ূস প্রায় একক প্রচেষ্টায় আবারও গোল ব্যবধান কমান। ৭৪ মিনিটে বার্নার্দো সিলভার দুর্দান্ত শটের গোলের পরেও স্বস্তি মেলেনি সিটির। ৮২ মিনিটে বেনজেমার পানেনকা পেনাল্টি স্কোরলাইন ৪–৩ করে দেয়।
করিম বেনজেমা কালকের জোড়া গোল দিয়ে এ মৌসুমে তাঁর অসাধারণ ফর্ম ধরে রাখলেন। এ মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাদ্রিদ তারকার গোলের সংখ্যা ৪১। তিনি এখন রিয়াল মাদ্রিদের ইতিহাসের পঞ্চম ফুটবলার যিনি এক মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৪০–এর বেশি গোল করলেন। বার্নার্দো সিলভার পা থেকে আসে সিটির চতুর্থ গোল।
ম্যাচ জিতে খুশি থাকলেও সিটি বসের মনে যে একটা খচখচানি আছে, সেটি লুকোননি গার্দিওলা। তাঁর মতে আগামী সপ্তাহের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে তাদের চাপ থাকছেই। কোনো দল চার গোল করার পর এই চাপটা থাকা উচিত ছিল না, ‘প্রথমার্ধে রিয়াল যেভাবে খেলায় ফিরেছে, আমার মনে হয়, এই সুযোগটা আমরাই তৈরি করে দিয়েছি তদের। আমাদের বিল্ডআপ ভালো ছিল না। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা গোল খেয়েছি, আমরা আরও গোল করতে পারতাম। তবে মাদ্রিদে আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয় লেগে আমরা জেতার জন্য সর্বস্ব উজাড় করে দেব।
সম্পাদনায়ঃ শাহাদাত হোসাইন