টপ নিউজ ডেস্কঃ আজ অক্ষয়কুমার মৈত্রর ১৬১ তম জন্মবার্ষিকী। তিনি কুষ্টিয়া জেলার মীরপুর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে ১৮৬১ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম ছিল মথুরানাথ মৈত্রেয় এবং মাতার নাম সৌদামিনী দেবী। রাজশাহীর গুড়নই গ্রামে ছিল মৈত্রেয় পরিবারের আদি বাস। পরে নানা কারণে কুষ্টিয়ার কুমারখালিতে বসবাস শুরু করেন মথুরানাথ। সেখানে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে কাঙাল হরিনাথের সঙ্গে। কাঙাল হরিনাথের কাছেই শুরু হয় অক্ষয়কুমারের বাল্যশিক্ষা।
রাজশাহীর স্বনামখ্যাত আইনজীবী বৈদ্যনাথ বাগচীর কন্যা ছিলেন অক্ষয়কুমারের মাতা সৌদামিনী দেবী। পুত্রের লেখাপড়ার বিষয় বিবেচনা করে সেই সূত্রে মথুরানাথ রাজশাহীতে আসেন ওকালতি পরীক্ষা দেয়ার ইচ্ছায়। সে বছর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় পরীক্ষা দিতে না পারলেও একটি সরকারি চাকরি পেয়ে যান রাজশাহীর দেওয়ানি আদালতে। ফলে, তাদের রাজশাহীতে বসবাস পাকাপোক্ত হয়।
অক্ষয়কুমারের অন্যতম উল্লেখযোগ্য কাজ হলো, তিনি রাজশাহী শিল্প-বিদ্যালয় (ডায়মন্ড জুবিলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল) প্রতিষ্ঠাতা। এই বিদ্যালয়ে তিনি পাঁচ বছর কাল অধ্যাপক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর উল্লেখ্যযোগ্য কীর্তির মধ্যে আরও রয়েছে, পান্ডিত্যপূর্ণ গবেষণামূলক গ্রন্থ রচনা, ‘ঐতিহাসিক চিত্র’-এর সম্পাদনা এবং ‘বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি’র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালন।
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়-র সবচেয়ে সাড়া জাগানো গ্রন্থ ‘সিরাজদ্দৌলা’। ইংরেজ ঐতিহাসিকরা বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা সম্পর্কে যে সমস্ত মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাঁর চরিত্রকে কলঙ্কিত করেছেন তা অক্ষয়কুমার নানা গবেষণা ও যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে অপনোদন করেন। ‘সিরাজদ্দৌলা’ গ্রন্থ পড়ে রবীনদ্রনাথ ঠাকুর মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘বাঙ্গালা ইতিহাসে তিনি (অক্ষয়কুমার) যে স্বাধীনতা যুগ প্রবর্তন করিয়াছেন সেজন্য বঙ্গ-সাহিত্যে ধন্য হইয়া থাকিবেন তিনি।’’ এই কীর্তিমান ঐতিহাসিক ১৯৩০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি পরলোক গমন করেন।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা