টপ নিউজ ডেস্কঃ ২৫ মার্চ মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন। নিরীহ, নিরস্ত্র, ঘুমন্ত বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বর্বরোচিত গণহত্যা চালানোর এক ভয়াল স্মৃতির নাম ২৫ মার্চ ১৯৭১। এই রাতেই রচিত হয়েছিল বিশ্বের নৃশংসতম গণহত্যার এক কালো অধ্যায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’।
সময়টা ছিল ভাবে পূর্ণ। করায় ঢাকা তখন বিক্ষোভের শহর। ঢাকায় উড়ানো হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
একাত্তরের এই দিনটিতে সাধারণ মানুষ ছিল স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষায় উজ্জীবিত। বিরাজ করছিলো রাজনৈতিক উত্তেজনা। গণপরিষদের অধিবেশন স্থগিত, ৭ মার্চের ভাষণ আর পশ্চিম পাকিস্তানীদের টালবাহানা এক গভীর ষড়যন্ত্রের আভাস দিয়েছিলো। কিন্ত তার ভয়াবহতা এত নিষ্ঠুর, এত নির্মম হবে তা বাঙালিসহ বিশ্ববাসী ধারণাও করতে পারেনি।
সে রাতে বাঙালিরা সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন তখনী ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনী। রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে জিপ-ট্রাক বোঝাই করে পাকিস্তানের সৈন্যরা ছড়িয়ে পড়ে শহরজুড়ে। ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন, পিলখানা ইপিআর সদর দফ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, নীলক্ষেতসহ ঢাকার সর্বত্র চলেছে তান্ডব। কিছুক্ষণের মধ্যে ঢাকা পরিণত হয় লাশের শহরে।
সে রাতেই গ্রেফতার হন বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তবে তার আগেই ২৫ মার্চ মধ্যরাত অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
২৫ মার্চের সেই রাতে ঠিক কতজন বাঙালি প্রাণ হারিয়েছিল এর কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় নি। তবে অস্ট্রেলিয়ার পত্রিকা সিডনি মর্নিং হেরাল্ড অনুসারে, শুধুমাত্র ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশের প্রায় একলাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলে প্রকাশ করেছিল, তা অনুসারে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।
স্বাধীনতার পর থেকে এই রাতটিকে ‘কালরাত’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ২০১৭ সাল থেকে এ দিনকে গণহত্যা দিবস হিসেবেও পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি পৃথক বক্তব্য দিয়েছেন।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা