সর্বশেষ

26.2 C
Rajshahi
মঙ্গলবার, মার্চ ২১, ২০২৩

নওগাঁয় পুকুর মালিকদের প্রভাবে কৃষকের শত বিঘা জমির ধান পানির নিচে

- Advertisement -

নওগাঁ প্রতিনিধি: কদিন বাদে কৃষক ধান কেটে ঘরে তুলবে। কৃষকের ঘরে নতুন ধানে গন্ধে ভেষে বেড়াবে কিন্তু নওগাঁ সদর উপজেলার চুন্ডিপুর ইউনিয়নের গাংজোয়ার ও চুনিয়াগাড়ি মৌজার বিলের প্রায় ১ শত বিঘা জমির ধান পানির নিচে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষকেরা এই দেখে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলাকায় প্রায় ৩০ টি পুকুর রয়েছে। পুকুর মালিকেরা রাতের আধারে মটর বসিয়ে পুকুরের পরিত্যক্ত পানি মাঠের ধানের জমিতে দেয়ার কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে জমির ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই বিষয়ে সুরাহ চেয়ে স্থানীয়রা পুকুর মালিকদের সাথে একাধিকবার কথা বলতে গেলে ওই সব প্রভাবশালী পুকুর মালিকেরা তাদের গুণ্ডাবাহিনীর দাঁড়া ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করছেন গ্রামের নিরীহ কৃষকদের। 

- - Advertisement - -

ভুক্তভোগী কৃষক আলি আকবর বলেন, মাঠের সব ধান পেকে গেছে, ফলনও ভালো হইছে, কদিন বাদে কাটতে হবে কিন্তু এই সময়ে এলাকার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তাদের পুকুরের পরিত্যক্ত নষ্ট পানি রাতের আধারে বৈদ্যুতিক মটর বসিয়ে পুকুরের পানি গুলো তুলে আমাদের ধানের জমিতে পাইব দিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিয়ে ধান নষ্ট করে দিচ্ছেন। আমরা অসহায় কৃষক দিন আনি দিন খাই, নুন আনতে পান্তা ফুরায় আমরা বর্গা নিয়ে জমি চাষ করি।আমরা প্রতি বিঘা জমি বর্গা বাবদ ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা দেই এক বছরের জন্য। এক বিঘা জমিতে ধান হয় ২২থেকে ২৫মণ খরচ হয় ১২থেকে ১৩ হাজার টাকা। পুকর মালিকেরা পানি ছেড়ে দিয়ে আমাদের ধান পচে নষ্ট হয়ে ধানে গাছ বের হয়ে গিয়েছে। আমরা গরীব অসহায় কৃষক, প্রভাবশালি পুকুর মালিকেরা আমাদের ধান নষ্ট করে দিয়েছে। আমরা এখন কি খাব পরিবার নিয়ে কোথায় যাব। আমাদের সামনের পথ ভিক্ষা ছাড়া আর কিছুই করতে পারব না। 

- Advertisement -

গ্রামের আরেক কৃষক মাসুদ রানা জানান, আমাদের গ্রামের প্রভাবশালি পুকুর মালিক সেন্টু মোল্লা, তজিল প্রমানিক, আজিজার মাষ্টার, ফিরোজ প্রমানিক তাদের সাথে আমরা গ্রামের সব কৃষক একাধিকবার কথা বলতে গিয়েছি তারা কথা না বলে আমাদেরকে হুমকি ধামকী ও মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন।

এই বিষয়ে স্থানীয় পুকুর মালিকদের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তারা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি নয়। 

চন্ডিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুবেল হোসেন সাথে কথা হলে তিনি জানান, ধান চাষ ও মাছ চাষ কৃষি কাজের অংশ কিন্তু ধান চাষের জন্যে মারাত্মক ভাবে ক্ষতি হবে এমন কোন কাজ করা যাবে না। গ্রামের কিছু প্রতিনিধি গণ আমার কাছে এসেছিল আমাকে জানিয়েছেন। আমি ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যকে পরিদর্শনের জন্য পাঠিয়েছিলাম কি কারনে জমির ধান গুলো ডুবে নষ্ট হচ্ছে। যতোটুকু জেনেছি মাঠে একটা ছোট ক্যানেল (ড্যারা) ছিল সেই ক্যানেল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে মাঠের পানি ঠিকমতো চলাচল করতে পারতেছে না। এই কারণে মাঠে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি ক্যানেলটি নতুনভাবে খননের জন্য। ক্যানেল খনন হয়ে গেলে মাঠে জলাবদ্ধতা আর থাকবে না।

এ বিষয়ে নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহি অফিসার মির্জা ইমাম উদ্দিন বলেন, গ্রামবাসী একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা

- Advertisement -

Related Articles

আপনার মন্তব্য

Latest Articles