নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী জেলা মোটর ও শ্রমিক ইউনিয়নের কমিটির অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ওই ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম জনি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল সোমবার (৬ জুন) নগরীর সীমান্ত নোঙরে জনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। তার এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উঠে আসে রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের শ্রমিকদের সুবিধাবঞ্চিত করা, তাদের বেতন না দেয়া, ইউনিয়নের আয়ের টাকা কোষাগারে জমা না হওয়াসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কথা। এসময় জহুরুল ইসলাম জনি সাংবাদিকদের জানান, আমি রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ ও রাজশাহী বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির দপ্তর সম্পাদক। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নে কোষাধ্যক্ষ হওয়ার পর থেকে আমাকে দিয়ে ব্যাংকের চেক স্বাক্ষর আর ভাউচার স্বাক্ষর করিয়ে নেয় তারা।
আমার কাছে ২০১৯ থেকে ২০২১ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সব হিসেব আছে। যেখানে আয় অনেক হলেও শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা হয়না। আমি কোষাধ্যক্ষ হয়ে নিরবে পাপের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি। হাজার হাজার শ্রমিকদের টাকা আত্মসাৎ করে জীবন ও জীবিকা নিয়ে খেলায় মেতে উঠেছে রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। তিনি জানান, মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের আয় হলেও জমার খাতায় কারচুপি। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের জমি বিক্রি করেছে ১৯ কাঠা। কিন্তু শ্রমিকদের বলা হয়েছে ১৬ কাঠা বিক্রি করা হয়েছে। সেই টাকার কোনো খোজ নাই। গাড়ির চেন বিক্রি করা হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার। মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের বাঘা শাখা বিক্রয় করা হয়েছে।
প্রতিদিন রাজশাহীর মিনি বাস থেকে আঞ্চলিক কমিটির নামে ১৯০ থেকে ২০০ গাড়িপ্রতি ২০ টাকা নেয়া হয়। ঢাকার কোচ ভিআইপি থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা তোলা হলেও জমার খাতায় নাই। ঢাকার লোকাল গাড়ি থেকে ২৪০ টাকা করে নেয়া হয়। কিন্তু জমা করা হয় মাত্র ১০০ টাকা। বর্তমানে ৮ নভেম্বর ২০২১ সাল থেকে ৩১০ টাকা করে তোলা হচ্ছে। জমা হচ্ছে ১০০ টাকা করে। পঙ্গু অসহায় শ্রমিকদের নামে ৩০ টাকা করে তোলা হয় কিন্তু খাতায় তা জমা হয় না। বগুড়া ও রংপুর জেলার গাড়ি থেকে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে তোলা হয়। কিন্তু হিসেবের খাতায় জমা হয় না। ১০১ জন শ্রমিকের নামে ৩০ টাকা তোলা হয়। কিন্তু সেই জমার খাতায় ২০ টাকা করে লিখা হয়। তিনি নেতাদের প্রশ্ন করেন তাহলে ১০ টাকা করে কোথায় যায়? মাসিক চাঁদা ২০১৭ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত উঠানো হলেও ১০ লক্ষ টাকাও তারা জমা দেখাতে পারেনি। কিন্তু ২০১৭ সালের নির্বাচনী তফসিল অনুযায়ী ৩ হাজার ৪২০ জন শ্রমিক লাল কার্ডধারী, আরও সাদা কার্ডধারী শ্রমিক তো আছেই। তাদের কাছ থেকে মাসে ৩০ টাকা করে চাঁদা নেয়া হয়। যার মূল্য দাঁড়ায় প্রতিবছরে ১২ লক্ষ ৩১ হাজার ২০০ টাকা। প্রতিদিন রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের হাজার হাজার টাকা আয় আসে ইউনিয়নের কেরানি পারভেজের হাতে। তা থেকে চা বিল ৬ হাজার টাকা খরচে চলে যায়। চিকিৎসা, সাহায্য ও অন্যান্য খরচ বাবদ যায় আরো কিছু টাকা। কিন্তু বাকি টাকার কথা সাধারণ সম্পাদককে বলতে গেলে কেরানি কে নিয়ে বসতে হবে জানায়। কিন্তু কোনো সুরাহা মেলে না হয়না। দিনের পর দিন, মাসের মাস, বছরের বছর চলে যাচ্ছে।
তিনি এই বিষয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের মাধ্যমে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র এবং ইউনিয়নের প্রধান উপদেষ্টা এ এইচ এম খায়রুজ্জামানের কাছে তদন্ত সাপেক্ষে সুষ্ঠ বিচার দাবী করেন।