সর্বশেষ

36.2 C
Rajshahi
শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের স্ট্যাটাসে মানবাধিকার কমিশনের চিঠি ডিসিকে

টপ নিউজ ডেক্স: ‘এখনো কৈলাসদের (হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ) রেস্টুরেন্টের বাইরে বসে খেতে হয়। মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করি’ লিখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লালমনিরহাটের বাসিন্দা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল আলিম একটি পোস্ট করেছিলেন । সেই পোস্টের পরিপ্রেক্ষিতে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসককে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ।

গতকাল বুধবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক এম রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে প্রতিবেদন ২২ জানুয়ারির মধ্যে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার  লালমনিরহাটে আলোচিত হয় বিষয়টি।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে প্রতিবেদন তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়, আইনের দৃষ্টিতে সব নাগরিক সমান। ২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ধর্ম, বর্ণ, গোষ্ঠী,  নারী, পুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করবে না রাষ্ট্র । কিন্তু মৌলিক মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে প্রতীয়মান হয় উল্লিখিত বিষয়টি । যখন স্বপ্ন দেখছে মানুষ ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের, তখন দেশের যেকোনো প্রান্তে বৈষম্যের এমন অভিযোগ নিন্দনীয়।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশনা পেয়ে তিনি বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে  সত্যতা পেয়েছেন অভিযোগের। তিনি দেখেছেন, রেস্তোরাঁর বাইরে বসে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ  খাবার খাচ্ছেন। রেস্তোরাঁ মালিককে বলেছেন, এসব মেনে নেওয়া হবে না ,এটা মানবাধিকার লঙ্ঘন। তাঁরাও হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খেতে পারবেন অন্যদের মতো।

জেলা প্রশাসক এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, দীর্ঘদিনের সমস্যাটি সমাধানের জন্য বদলাতে হবে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি । সে জন্য ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মানুষের কাজ করতে হবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে (এডিএম)একটি তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে ।

অধ্যাপক মো. আবদুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, শহরের মিশন মোড় এলাকায় গত মঙ্গলবার সকালে হরিজন সম্প্রদায়ের একটি পরিবারের সদস্যদের রেস্তোরাঁর বাইরে বসে খেতে দেখে তাঁর খুব খারাপ লাগে। তখনই ফেসবুকে ছবি দেন  মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে । মানবাধিকার কমিশন ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষায় সোচ্চার হতে হবে সবাইকে । আইনে মানুষের যে অধিকার  আছে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ লালমনিরহাটের সভাপতি রঙ্গলাল বাশফোর বলেন, ‘আমরা কি  নাগরিক না দেশের?  আমরা কেন হোটেল-রেস্তোরাঁর ভেতরে বসে খেতে পারব না? আমাদের খেতে হয় রাস্তায় বসে, থালা-বাসন, মগ-গ্লাস, চায়ের কাপ  রাখতে হয় সঙ্গে। অথচ ভেতর বসে ফকির, অসুস্থ রোগীরাও খেতে পারেন। আজ অন্য সম্প্রদায়ের মানুষজন আমাদের চাকরিবাকরি নিয়ে যাচ্ছে। অথচ  বৈষম্যের শিকার হচ্ছি আমরা। শুধু ভোটের সময়ে মানুষ আমরা, ভোটের পরে আমরা নোংরা। অথচ সমাজের নোংরা আমরাই পরিষ্কার করি।’

সম্পাদনায়: শাহনাজ সাফা

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles