সর্বশেষ

15.9 C
Rajshahi
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১২, ২০২৩

আজ ২৩ শে মার্চ, পতাকা দিবস

- Advertisement -

টপ নিউজ ডেস্কঃ ২৩ শে মার্চ,আজ ঐতিহাসিক পতাকা দিবস। বাঙালির  ইতিহাসের একটি গৌরবজ্জল ‍দিন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রাক্কালে এদিন দেশের সর্বত্র সবুজ জমিনে লাল বৃত্তের মাঝে সোনালি মানচিত্র আঁকা স্বাধীন বাংলার পতাকা ঊত্তোলন করা হয়। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধের সূচনাতেই পতাকা উত্তোলনের এ ঘটনা বাঙালির মুক্তি আন্দোলনে এক অন্য রকম ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

২৩ শে মার্চ ১৯৭১ সালে পশ্চিম পাকিস্তানে ও ঢাকার প্রেসিডেন্ট হাউসে  ‘পাকিস্তান প্রজাতন্ত্র দিবস’ পালন করলেও গোটা পূর্ব পাকিস্তানে তা পালিত হয় ‘ঐতিহাসিক লাহোর দিবস’ হিসেবে। পাকিস্তান দিবসকে ন্যাপ ‘স্বাধীন পূর্ববঙ্গ দিবস’ এবং স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ‘প্রতিরোধ দিবস’ হিসেবে পালন করে।‘পাকিস্তান দিবস’ হলেও ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবন ও সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ছাড়া বাংলাদেশের আর কোথাও পাকিস্তানের পতাকা ওড়েনি সেইদিন।

- - Advertisement - -

ঢাকার সচিবালয়, হাইকোর্ট, , ইপিআর, রাজারবাগ পুলিশ সদর দপ্তর, ঢাকা বেতার, টেলিভিশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রধান বিচারপতি ও মুখ্য সচিবের বাসভবন সহ সব সরকারি ও বেসরকারি ভবন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলা হয়।

স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সেদিন স্বাধীন বাংলার পতাকা বিতরণ করা হয়। দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত নকশা দেখে পতাকা বানিয়েও নিজ নিজ বাসগৃহে উত্তোলন করেন অনেকে মানুষ। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেদিন কালো পতাকাও উড়ানো হয়।

- Advertisement -

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ধানমণ্ডির বাসভবনে নিজ হাতে উত্তোলন করেন স্বাধীন বাংলার পতাকা। এ সময় বাঙালির সম্মিলিত কণ্ঠে ‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’ গানটি অভূতপূর্ব কাঁপন তোলে চারদিকে। সামরিক কায়দায় জাতীয় পতাকাকে অভিবাদন জানান স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী।

ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলার পর প্রভাতফেরি বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ছাত্র-ছাত্রী ও সাবেক বাঙালি সৈনিকদের সমন্বয়ে  ‘জয় বাংলা বাহিনী’র আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ ও মহড়া। এ বাহিনীর সদস্যরা সামরিক কায়দায় জাতীয় পতাকাকে অভিবাদন জানায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালবাসি’ সংগীতটি বাজানো হয়, যা পরে জাতীয় সঙ্গীত করা হয়।  ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, আ স ম আবদুর রব ও আবদুল কুদ্দুস মাখন জয় বাংলা বাহিনীর গার্ড অব অনার নেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘কারো করুনার পাত্র নয় বাংলার মানুষ। আপন শক্তির দুর্জয় ক্ষমতাবলেই বাঙালি স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনবে।’

স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করতে গেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাঙালি ছাত্র-জনতাকে বাধা দেয় পাকিস্তান সেনারা। তবে ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিবাদের মুখে পিছু হটতেও বাধ্য হয় তারা। বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা সব বাধা উপেক্ষা করেই সেখানে পতাকা তোলে।

ঢাকার চীন, ইরান, নেপাল ও ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসে প্রথমে পাকিস্তানি পতাকা তোলা হলেও পরে তা নামিয়ে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। পাকিস্তানি পতাকার পরিবর্তে স্বাধীন বাংলার পতাকা তোলা হয় ব্রিটিশ হাইকমিশন ও সোভিয়েত কনস্যুলেটেও। অবশ্য ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে এদিন কোনো পতাকাই তোলা হয়নি।

রাজধানীর পাশাপাশি দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত কেবলই স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়তে দেখা গেছে সেদিন। রাজপথ, ভবন, গাছের চূড়া ও লাঠি-বর্শা-বন্দুকের মাথায় পতাকা উড়িয়ে মিছিলে মিছিলে গর্জে উঠেছে বীর বাঙালি।

- Advertisement -

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles