সর্বশেষ

30.8 C
Rajshahi
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

আজ হুমায়ুন ফরিদীর মৃত্যুবার্ষিকী

টপ নিউজ ডেস্কঃ তিনি ভীষণ কৌতুকপ্রিয় মানুষ ছিলেন। নাটকের সেটে সদা সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন কৌতুকে । এতো কৌতুক মনে রাখেন কীভাবে, প্রশ্নের উত্তরে একবার বলেছিলেন, ‘জীবনটাই তো কৌতুক, কেউ থাকব না আমরা , থাকবে শুধু কৌতুক।’

নিজের জীবনের সাথে কৌতুক করতে করতে অস্তাচলে যাওয়া হুমায়ুন ফরীদির অভাব পূরণ হওয়ার নয় কখনোই । হচ্ছেও না। সবখানে ফরিদী অভাব বোধ! তার চলে যাওয়ার দিনে যেন সেই অভাব আরও বেশি করে পেঁচিয়ে ধরে অক্টোপাসের মতো । আগুন লাগা ফাগুন দুয়ারে দাঁড়িয়ে। সেই ফাগুন বরণের উৎসবেও লেগে থাকা ফরীদিকে হারানোর বিষাদ।। মঞ্চ থেকে চলচ্চিত্র- অভিনয়ের সবখানেই আজ নীরব শোক চলে অবিরাম। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারিতে শোকের বৃষ্টি নামিয়ে না ফেরার দেশে কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি পাড়ি দিয়েছিলেন।

তার বিদায়ে কেঁদেছিলেন কোটি ভক্ত। সেদিন ফরীদির বাসভবন পরিণত হয়েছিল মানুষের সমুদ্রে। শোবিজের নানা অঙ্গনের মানুষেরা সেদিন লোকলজ্জা ভুলে আহাজারি করে কেঁদেছিলেন ফরীদির জন্য। এভাবে আর কোনো শিল্পীর জন্য কান্না দেখেনি এদেশের মানুষের। হয়তো ব্যক্তিজীবনে খুব বেশি একা ছিলেন বলেই অনেক বেশি মানুষের প্রিয় ছিলেন তিনি।

চরিত্র থেকে চরিত্রে ভিন্নতা নিয়ে এই মানুষটি হয়ে উঠেছিলেন ভার্সেটাইল। অভিনয়ের সাবললীতায় মঞ্চ থেকে ছোট কিংবা বড় পর্দায় কোটি মানুষকে মোহিত করেছেন এই অভিনেতা। অভিনয় দিয়ে মানুষকে কাঁদিয়েছেন, হাসিয়েছেন আবার ক্রোধে জ্বালিয়েছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন অভিনেতা কমই এসেছে যে কি না একই সাথে মঞ্চ, টিভি এবং চলচ্চিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন।

শিল্পী হুমায়ুন ফরীদির জন্ম ২৯ মে, ১৯৫২, নারিন্দা, ঢাকা। বাবা এটিএম নুরুল ইসলাম ছিলেন জুরি বোর্ডের কর্মকর্তা। বাবার বদলির চাকরির সুবাদে ফরীদিকে মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, কিশোরগঞ্জ, মাদারীপুরসহ ঘুরতে হয়েছে অসংখ্য জেলায়। মা বেগম ফরিদা ইসলাম গৃহিণী। ছোটবেলায় ছন্নছাড়া স্বভাবের জন্য ফরীদিকে ‘পাগলা’, ‘সম্রাট’, ‘গৌতম’-এমন নানা নামে ডাকা হতো।

প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রাম কালীগঞ্জে। মাদারীপুর ইউনাইটেড ইসলামিয়া গভর্নমেন্ট হাই স্কুল পাস দিয়ে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে ভর্তি হলেন। এলো একাত্তর, চলে গেলেন যুদ্ধে। নয় মাসের যুদ্ধের পরে লাল-সবুজের পতাকা হাতে ঢাকায় ফিরলেও ঢাকা ভার্সিটিতে ফেরেননি।

টানা পাঁচ বছর বোহেমিয়ান জীবন কাটিয়ে শেষে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অনার্সে তিনি প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিশিষ্ট নাট্যকার সেলিম আল দীনের সংস্পর্শে আসেন। এই ক্যাম্পাসেই ‘আত্মস্থ ও হিরন্ময়ীদের বৃত্তান্ত’ নামে নির্দেশনা দেন একটি নাটক লিখে এবং অভিনয়ও করেন ফরীদি। ছাত্রাবস্থায়ই ১৯৭৬ সালে তিনি সদস্য হন ঢাকা থিয়েটারের । জড়িয়ে যান মঞ্চের সাথে।

সম্পাদনায়ঃ পূরবী রায় ।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles