নওগাঁ প্রতিবেদক: নওগাঁ খাদ্য গুদামের শ্রমিক সহিদুলকে কৃষক বানিয়ে পুরাতন ধান দিয়ে বোরো মওসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে খাদ্য মন্ত্রনালয় থেকে ভার্চূয়ালী যুক্ত হয়ে নওগাঁ সদর খাদ্য গুদামে সংগ্রহ অভিযানে উদ্বোধন করেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মওসুমে ২৭ টাকা কেজি হিসেবে বোরো ধান সংগ্রহ করা হবে এবং এই সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন। যার মধ্যে নওগাঁ সদর উপজেলায় ২ হাজার ৪৪৮ মেট্রিক টন, আত্রাই থেকে ২ হাজার ৫৫২ মেট্রিক টন, রানীনগর থেকে ২ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন, মহাদেবপুর থেকে ৩ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন, পেত্নীতলা থেকে ২ হাজার ৬৮৯ মেট্রিক টন, ধামইরহাট উপজেলা থেকে ২ হাজার ৫১৪ মেট্রিক টন, বদলগাছী থেকে ১ হাজার ৬১২ মেট্রিক টন, সাপাহার উপজেলা থেকে ৮০৩ মেট্রিক টন, পোরশা থেকে ১ হাজার ১২৫ মেট্রিক টন, মান্দা থেকে ২ হাজার ৭১৭ মেট্রিক টন এবং নিয়ামতপুর উপজেলা থেকে ৩ হাজার ৯৪ মেট্রিক টন।
জানা গেছে, সদর উপজেলার দুবলহাটি ইউনিয়নের কাদোপাড়া গ্রামের সহিদুর সদর খাদ্যগুদামের শ্রমিক। পাশাপাশি তিনি একজন কৃষক। বৃহস্পতিবার বোরো মওসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানে তার কাছ থেকে এক টন ধান কিনে সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। সংগ্রহ অভিযানে তার কাছ থেকে যে ধান ক্রয় করা সে তার জমির না। প্রায় ৩ বিঘা জমিতে তিনি ধান রোপন করেছেন। তবে এখন সে ধান কাটা মাড়াই করার উপযোগী হয়নি। খাদ্যমন্ত্রীকে ভুল বুঝিয়ে খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ পুরনো ধান দিয়ে নতুন ধান সংগ্রহের উদ্বোধন করিয়েছেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, নওগাঁ জেলা প্রশাসক জনাব খালিদ মেহেদী হাসান, রাজশাহী’র আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জনাব জি.এম. ফারুক হোসেন পাটোয়ারী, কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জনাব শামসুল ওয়াদুদ, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জনাব আলমগীর কবির, নওগাঁ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক জনাব আব্দুল খালেক, জেলা ধান্য চাউল আড়ৎদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জনাব নিরোদ বরন সাহা চন্দন, জেলা চাউল কল মালিক গ্রুপের সাধারন সম্পাদক জনাব ফরহাদ হোসেন চকদার, বাংলাদেশ অটোমেটিক রাইস মিল ওনার্স এ্যসোসিয়েশনের সাধারন সম্পাদক জনাব তৌফিকুর রহমান বাবুসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা, চাউল কল মালিক গ্রুপ, আড়ৎদার এবং ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবুন্দ ও জেলার প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা।
এই ব্যাপারে খাদ্যগুদাম শ্রমিক কৃষক সহিদুল বলেন, খাদ্যগুদামে শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি কৃষি কাজ করি। আমি তিন বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। যারমধ্যে এক বিঘা হাইব্রীট। হাইব্রীট ধান কেটে খাদ্যগুদামে দিলাম।
এই বিষয়ে শ্রমিক সহিদুলের স্ত্রী বলেন, আমরা তিন বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। তবে এখনও কোন ধান কাটা হয়নি। ঈদের পর কাটব। আর হ্যাঁ, গত বছর কিছু জমিতে হাইব্রীটের আবাদ করেছিলাম কিন্তু ভাল ফলন না পাওয়ায় এই বছর হাইব্রীট ধান আবাদ করা হয়নি। খাদ্য গুদামে কোথা থেকে ধান দিয়েছে আমি বলতে পারব না।
নওগাঁ সদর খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, বোরো ধান সংগ্রহের উদ্বোধন উপলক্ষে কৃষক সহিদুর এর নিকট থেকে ধান ক্রয় করে উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া তিনি আমাদের গুদামের শ্রমিক। যেহেতু এখনো কোন লটারি হয়নি। তাকে এক টন ধান নিয়ে আসতে বলা হয়েছিল। কোথায় থেকে ধান নিয়ে আসছে তা বলতে পারবো না। তবে নতুন ধান এটাই জানি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবির, কৃষকের কাছ হতে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে, ধান পুরাতন না।জেলায় ধান কর্তনের পরিমান খুবই কম।কৃষকের ধান এখনও প্রস্তুত হয়নি। সেজন্য সহিদুল পরিচিত হওয়ায় তাকে ধান আনতে বলা হয়েছিল।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা