সর্বশেষ

31.6 C
Rajshahi
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে  ৫ কোটি টাকার টেন্ডার 

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ওষুধ,যন্ত্রপাতি,গজ-বেন্ডেজসহ প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের এমএসআর সামগ্রী সরবরাহের টেন্ডার পাইয়ে দিতে হাসপাতাল তত্বাবধায়ক ডা.জাহিদ নজরুল চৌধুরীর বিরুদ্ধে নানা অপকৌশলের অভিযোগ উঠেছে। পিপিআর বর্হিভুত জটিল শর্তাবলী আরোপ করে টেন্ডার নোটিশ প্রদান করায় অসংখ্য ঠিকাদার টেন্ডারে অংশ নিতে পারছেন না। গত বছর টেন্ডারের শর্তাবলী পরিবর্তন করার দাবি জানিয়ে স্থানীয় ঠিকাদাররা যৌথভাবে তত্বাবধায়ক বরাবরে আবেদন করলেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। এমনকি চলতি অর্থবছরের টেন্ডারের নোটিশ প্রদানের পর থেকে শর্তাবলী স্বাভাবিক নিয়মে করার জন্য বৈঠকের মাধ্যমে অনুরোধ জানালেও কোন কাজ হচ্ছে না বলে ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন। এতে করে একদিকে বিপুল সংখ্যক সিডিউল বিক্রি না হওয়ায় ঠিকাদারদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে না। একইসাথে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হবে,তেমনি নওগাঁবাসীও মান সম্পর্ন স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে নওগাঁ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের জন্য ওষুধ-পত্রাদি, যন্ত্রাংশ, গজ-বেন্ডেজ,আসবাবপত্রসহ এমএসআর সামগ্রী সরবরাহের লক্ষে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে ৬টি গ্রুপে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের। টেন্ডার নোটিশে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বরে টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় এবং শেষ তারিখ আগামী ২ অক্টোরব পর্যন্ত সিডিউল বিক্রির। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১৯ দিন অতিবাহিত হলেও জানা গেছে ১৯ সেপ্টেম্বর সোমবার পর্যন্ত মাত্র ৬ থেকে ৭ টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিডিউল সংগ্রহ করেছেন। স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.জাহিদ নজরুল চৌধুরী যোগসাজস করে পিপিআর বর্হিভুত টেন্ডারে জটিল শর্তারোপ ও নানা অপকৌশলে তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য এই পন্থা অবলম্বন করেছে। তারা জানান, গত বছর একইভাবে জটিল শর্ত আরোপ করে টেন্ডার আহবান করায় স্থানীয় কোন ঠিকাদাররা ওই টেন্ডারে অংশ নিতে পারে নাই। টেন্ডারের শর্ত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে স্থানীয় ঠিকাদারদের মধ্যে মের্সাস এন এল ট্রের্ডাস, আলম ট্রেডার্স, মের্সাস জীম মেডিসিন সেন্টার, মের্সাস বাবু ফার্মেসী,সের্মাস সামেনা মেডিক্যাল হল এবং মের্সাস শফিকুল আলম নামে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যৌথভাবে তত্বাবধায়কের বরাবরে আবেদন করেন।।

যৌথ আবেদনের উপর কোন গুরুত্বই দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে মেসার্স এন এল ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ নফিউল হোসেন কেতন বলেন নওগাঁ সদর হাসপাতালের এমএসআর সামগ্রী সরবরাহে নানা অপকৌশলে গত ৩ বছর ধরে আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। হাসপাতালের তত্বাবধায়ক গত বছর আর্থিক সুবিধা নিয়ে তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিয়েছেন। আবার চলতি বছরে একইভাবে তার পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ দিতে পিপিআর বির্হভুত টেন্ডারে জটিল শর্তাবলী যুক্ত করা হয়েছে। অথচ পিপিআরের স্বাভাবিক নীতিমালা অনুযায়ী এমএসআর সামগ্রী সরবরাহ নেওয়া কথা।

মের্সাস আলম ট্রের্ডাস এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে টেন্ডারে এর আগে বিগত ৫ বছরের মধ্যে ৬টি গ্রুপ মিলে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকার কাজের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে এবং সলভেন্সীর প্রত্যায়ন হিসাবে ব্যাংক কর্তৃক সলভেন্সেী সনদ দিলেই টেন্ডারে অংশ নিতে দেওয়া হয়েছে। অথচ চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে এমএসআর সামগ্রী সরবরাহের টেন্ডারের ৬টি গ্রুপের মধ্যে প্রথম ক’ গ্রæপের প্রায় দেড় কোটি টাকার ওষুধ-পত্রাদি ক্রয়ে তিন বছরের মধ্যে ২ কোটি টাকার কাজ করার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। আবার ঙ’ গ্রুপের প্রায় ৩৫ লাখ টাকার ক্যামিক্যাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৪০ লাখ টাকার এবং চ’গ্রæপের প্রায় ২৪ লাখ টাকার আসবাবপত্র ক্রয়ের বিপরীতে ৩০ লাখ টাকার কাজ করার অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছে। একই সাথে সিডিউল দাখিলকারী ঠিকাদারদের প্রত্যেকের গ্রæপ অনুযায়ী ব্যাংক সলভেন্সেী হিসাবে প্রত্যেকের ব্যাংক হিসাবে ৬ কোটি টাকা টাকার লিকুইডমানি থাকতে হবে বলে টেন্ডার নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। এর একটি শর্ত পুরুণ করা না হলে ওই ঠিকাদার টেন্ডারে অংশ নিতে পারবেন না।
এব্যাপারে এমএসআর সামগ্রী সরবরাহকারী ঠিকাদার মোঃ হাসানুজ্জামান বাবু বলেন গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে নওগাঁ হাসপাতালের এমএসআর সরবরাহের টেন্ডারে স্বাভাবিক শর্তাবলীর মাধ্যমে টেন্ডারে অংশ নিয়েছি। অথচ এরপর থেকে টেন্ডারে জটিল শর্তারোপ করে আমাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষ কোন ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য এমন জটিল ও কঠিন শর্তারোপ করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেলারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধরী বলেন,কোন অনিয়ম বা অপকৌশল আশ্রয় নেওয়া হয়নি। পিপিআর ২০০৬ ও ২০০৮ অনুসরণ করেই টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। যেসব ঠিকাদার টেন্ডারে অংশ গ্রহন করতে পারছে না তারা এসব মিথ্যা অভিযোগ করতেই পারে।

সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles