আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে কিছু অভ্যাস তৈরি করা উচিত। ছোট ছোট সাতটি অভ্যাস যদি আপনি সুন্দর করে অনুশীলন করতে পারেন, তাহলে আপনার জীবনটা ইতিবাচকভাবে বদলে যাবে, যা নিজে নিজেই অনুভব করতে পারবেন। তবে শর্ত একটাই , টানা এক মাস অবশ্যই এই অভ্যাসগুলো অনুসরণ করতে হবে।
তাহলে আসুন জেনে নিই, যে সাত অভ্যাসে বদলে দিতে পারে জীবন।
১. দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুম শরীরের জন্য খুবই জরুরি। সেটা কিন্তু ৬-৭ ঘণ্টা হলেও ক্ষতি নেই। তবে প্রতিদিন এই সময়টুকু ঘুমানোর চেষ্টা অবশ্যই করতে হবে।এ জন্য নিয়মিত একই সময়ে ঘুমাতে যাবেন। দেখবেন কিছুদিন পর একই সময়ে ওঠার অভ্যাসও হয়ে যাবে। আমাদের দেহঘড়ি কিন্তু সেটা নিয়ন্ত্রণ করে। এভাবে অনুশীলন করলে শরীর সুস্থ এবং সবল থাকবে।
২. একটা সুস্থ মানুষের প্রতিদিন অন্তত তিন লিটার পানি অবশ্যই পান করা উচিত। তা-ও না পারলে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করবেন। বাইরে বের হলে সাথে পানির বোতল রাখতে পারেন। নির্দিষ্ট সময়ের পরপর পানি পান করুন। এতে কিন্তু শরীর সারাক্ষণ আর্দ্র থাকবে। এভাবে যদি এক মাস পানি পান করা যায় সেটা শরীর তার নিজস্ব দেহগড়ির সাহায্যে তা অভ্যাসে পরিণত করে নেবে। তখন আপনার নিজের শরীরই মনে করিয়ে দেবে পানি পান করার কথা।
৩. সূর্যালোকের সঙ্গে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্যের গভীর একটা সম্পর্ক আছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের শরীরে কিন্তু প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সূর্যের আলোর দরকার আছে। তাই দিনে ১০-৩০ মিনিট রোদে থাকার অভ্যাস করে নিন। বিশেষ করে ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা—এই তিন ঘণ্টা সবচেয়ে ভালো সময়। আলট্রাভায়োলেট রশ্মি এড়িয়ে শুধুমাত্র ভিটামিন ডি উৎপন্ন করতে সক্ষম–এমনই উপকারী আলো পাওয়া যাবে। এই এক মাস অভ্যাস করে এটাকে জীবনযাপনের সঙ্গী করে নিন।
৪. চিনি থেকে নিজেকে মুক্ত থাকুন। যেসব খাবারে চিনি আছে, তা অবশ্যই পরিহারের চেষ্টা করুন। আলাদা করে এ চিনি ও চিনিজাতীয় খাবার খাওয়ার দরকার নেই।এভাবে অন্তত এক মাস চিনি ছাড়া চা, কফি খান। প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হবে। পরে দেখবেন আপনার অভ্যাস হয়ে যাবে। চিনি শরীর বা ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। চিনির সঙ্গে বাইরের ভাজাপোড়া খাবারও বাদ দিয়ে দিন।
৫. ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে থাকে । আর এজন্য সপ্তাহে অন্তত তিন দিন নিয়মিত ব্যায়াম করুন। দেখবেন, ঘরের আশপাশে জিম বা যোগব্যায়ামের জায়গা আছে কি না। না থাকলে আপনার ঘরেই ম্যাট কিনে বসে পড়তে পারেন। ঘর বা বারান্দার একটা পাশেও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার ছোট্ট জিম।এসব কিছুই যদি না পারেন, তাহলে অন্তত হাঁটতে বেরিয়ে পড়ুন। সেই অবস্থাও যদি না থাকে তাহলে বাসার ছাদে হাঁটুন। ছাদ না থাকলে ঘরের মধ্যেই হাঁটুন। তবে কিন্তু জোরে জোরে অন্তত আধা ঘণ্টা হাঁটতে হবে, যাতে গায়ে ঘাম হয়।
৬. প্রতিদিন আধা ঘণ্টা বই পড়ার অভ্যাস করুন। সেটিও হতে পারে পত্রিকা, অনলাইন পত্রিকা, কোনো বিশেষ লেখা, ছোটগল্প, উপন্যাস, ভ্রমণকাহিনি বা প্রবন্ধ। সে যা-ই হোক না কেন, প্রতিদিনে আধা ঘণ্টা পড়ার অভ্যাস আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা সচল রাখতে সহায়তা করবে।
৭. দিনে অন্তত ১০ মিনিট মেডিটেশন করুন। ঘরের ভেতরে নিরিবিলি কোনো জায়গায় এই মেডিটেশন করতে পারেন। এমন কি ঘুম থেকে উঠেই সেরে ফেলতে পারেন এটি। এসব কিছুই না পারলে একটা জায়গায় পিঠ টানটান করে চুপচাপ বসে বুক ভরে শ্বাস নিন। শরীরের ভেতরে বাতাসটা অনুভব করুন। ধীরে ধীরে নিশ্বাস ছেড়ে দিন। এভাবেই আপনার শরীর আর মনকে সারা দিনের জন্য তৈরি করে নিন।
সূত্র: বিজনেস গ্রোথ মেন্টর
সম্পাদনায়: নাসরিন ইসলাম