টপ নিউজ ডেস্কঃ ইউক্রেনের বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘বলির পাঁঠা’ বলছেন বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, অন্যদের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্য প্রাণ দিচ্ছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন ,” এই হামলা এড়ানো সম্ভব ছিলো। যুক্তরাষ্ট্র নিজের নিরাপত্তার জন্য হুমকি এমন কিছু কি তার পাশের দেশে করতে দেবে? মেক্সিকোতে রাশিয়ান সামরিক ঘাটি মেনে নেবে?”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ প্রশ্ন তুলেন, “ইউরোপে এখনও কেন এতে আমেরিকান সৈন্য থাকবে?”
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন ভেঙে যায় তখন তো কথা ছিল ন্যাটো আর বাড়বে না কিন্তু সেটা তো মানা হয়নি। আমি ইউক্রেনে হামলার নিন্দা জানাই। হামলার পক্ষে কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। কিন্তু রাশিয়ার মতো একটি দেশ সব সময় অ্যামেরিকার অনুগত থাকবে- এটা আশা করা যায় না। তারা কেন ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগ দিলে তা সহ্য করবে? এটা তো রাশিয়ার বর্ডার নয়। ইউক্রেন অনেকখানি রাশিয়ার ভেতরে।”
তারা বলেন, প্রায় গুরুত্ব হারিয়ে বসা সামরিক জোট ন্যাটো এই হামলার মধ্য দিয়ে আরো কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য প্রাণ পেলো। জাতিসংঘের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ আরো অনেক খাতে সাফল্য থাকলেও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো ভ‚মিকা নেই। যুদ্ধ অবসানে কোনো ভূমিকা নেই। এর মূলে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের ভেটো ক্ষমতা। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ সদস্যের ভেটো ক্ষমতা সব সময়ই রাজনৈকিভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। নিরাপত্তা পরিষদের যে পাঁচ শক্তি তারা সবাই যুদ্ধ দেখছে, অসংখ্য মানুষের মৃত্যু দেখছে, তারপরও রাশিয়া ভেটো দিলো। রাশিয়া নিজেই একটি পক্ষ। অতীতেও রাজনৈতিক কারণে এই ভেটো ক্ষমতা ব্যবহার করা হয়েছে। ইরাক, আফগানিস্তানে এটা কোনো কাজে আসেনি।
তিনজন বিশ্লেষকেরই ধারণা, ইউক্রেনকে এখানে ব্যবহার করা হচ্ছে, রয়েছে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থ। যাদের ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানোর কথা ছিল, তারা এখন নানান অজুহাতে পিছিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এর শিকার হচ্ছে ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা
উৎসঃ ডিডব্লিওবাংলা