টপ নিউজ ডেস্কঃ সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়ে দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুমের সঙ্গে দেখা করেছেন। আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ । গতকাল শুক্রবার সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতি ও আমিরাতভিত্তিক সংবাদ সংস্থার বরাতে আল–জাজিরা এসব তথ্য জানিয়েছে।
সিরিয়া যুদ্ধের ১১তম বর্ষপূর্তি ছিল ১৫ মার্চ। আর এ বর্ষপূর্তির মাত্র কয়েক দিনের মাথায় সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গেলেন বাশার আল–আসাদ। ২০১১ সালে সিরিয়ায় যুদ্ধ হওয়ার পর এটিই বাশার আল–আসাদের প্রথম কোনো আরব রাষ্ট্র সফর।সিরিয়ার বার্তা সংস্থা সানার প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ ও আল মাখতুম দুবাইয়ে বৈঠক করেছেন। প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ ও মাখতুম দুই দেশের মধ্যে সার্বিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বিশেষ করে অর্থনৈতিক, বিনিয়োগ ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে কথা বলেছেন তাঁরা।
আল–জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাশার আল–আসাদের সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই সফর ইঙ্গিত দিচ্ছে যে আরব বিশ্বের কিছু দেশ নতুন করে বাশার আল–আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। এর মধ্যে জর্ডান, লেবাননসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ ইতিমধ্যে বাশার আল–আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করার চেষ্টা করছে । বাণিজ্য জোরদার করার জন্য এই দেশগুলো দামেস্কে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা শিথিলের আহ্বান জানিয়েছে।
১১ বছর আগে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার পর সিরিয়াকে ২২ সদস্যবিশিষ্ট আরব লিগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এবং প্রতিবেশী দেশগুলোও সিরিয়াকে বর্জন করে। এই যুদ্ধে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়েছিল সিরিয়ার প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী। এই যুদ্ধে সিরিয়ার বিশাল একটি অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। এগুলো পুনর্নির্মাণে হাজার কোটি ডলার খরচ হবে।
আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোর দাবি করে, সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার জন্য বাশার আল–আসাদ দায়ী। ২০১১ সালে বিক্ষোভকারীদের ওপর বাশার আল–আসাদ ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান চালানোর কারণে এমনটা হয়েছিল। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের শুরুর দিনগুলোতে আসাদবিরোধীদের সমর্থন দিয়েছিল আরব ও পশ্চিমা দেশগুলো। এবং আসাদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
সিরিয়া যুদ্ধে এখন স্থবিরতা চলছে।রাশিয়া ও ইরানের সামরিক সহযোগিতা নিয়ে দেশের বেশির ভাগ এলাকা আবারও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনছে আসাদ বাহিনী। বর্তমানে আরব দেশগুলো আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হয়েছে। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় কয়েকটি আরব দেশ চায় যে সিরিয়ায় তাদের শত্রু ইরানের প্রভাব কমুক।
সংযুক্ত আরব আমিরাত অবশ্য ইতিমধ্যে বাশার আল–আসাদের কাছে আসার চেষ্টাও চালিয়েছে। গত নভেম্বরে আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ দামেস্কে সিরিয়া প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। ২০১১ সালের পরে এটিই ছিল কোনো আমিরাতি কর্মকর্তার সিরিয়া সফর।
সম্পাদনায়ঃ মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ