বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১-২২ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার সবগুলো ইউনিটের ফলাফল মঙ্গলবার (২ আগস্ট) প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়া ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় যিনি গ্রুপ-২ এর রোল ৩৯৫৩৪ এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন, তিনি উক্ত গ্রুপে প্রথম হয়েছেন। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে আসার পর বাতিল হয়েছে রোলধারীর ফলাফল।
বুধবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকেই বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়- রাবির ফোকলোর বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী বায়েজিদ খান, গ্রুপ-২ এর রোল ৩৯৫৩৪ এর পরীক্ষার্থী তানভীর আহমেদের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। তিনি ঢাকার নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুস সালামের ছেলে। যিনি প্রকাশিত ফলাফলে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় দ্বিতীয় শিফটে প্রথম হয়েছেন।
২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিবৃতিতে, যে তিনজনের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়, তাদের একজন ছিলেন বায়েজিদ খান। কিন্তু তারপরও ওয়েবসাইটে সেই রোল ইনপুট করে দেখা যায়, রোলধারী ৯২.৭৫ পেয়েছেন — যা উক্ত গ্রুপে সর্বোচ্চ। সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, ৩৯৫৩৪ রোলটি ইনপুট করে দেখা যায়, রোলধারীর ফলাফল বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রীতিমতো ঝড় বইছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভর্তি কমিটির এমন উদাসীনতার কঠোর সমালোচনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ইংলিশ এন্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজেস-এর পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “ওই শিক্ষার্থীর খাতা সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হওয়া উচিত ছিল। তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেনি। ওই শিক্ষার্থীর ফল প্রকাশের মাধ্যমে পরীক্ষা কমিটির ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক বখতিয়ার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, “সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে বেশ সর্তক থাকে। তারপরেও যদি এমনটি হয়ে থাকে তবে এটি বড় ভুল। কারণ একটি ছেলে প্রক্সি দিতে এসে যখন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হয়, তখন এটি প্রমাণিত যে সে প্রক্সি দিয়েছে। তার মানে তাৎক্ষণিক ওই পরীক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এটি ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জন্য জন্য বড় ব্যর্থতা।”
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে এ ইউনিটের পরীক্ষা কমিটির সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ইলিয়াস হোসেন বলেন, “লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে বৈধ ওএমআর থাকায় আমি এটির রেজাল্ট করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে যে ধরা পড়েছিল তার বৈধ ওএমআর শিট থাকার পরেও রেজাল্ট হয়নি। কারণ বিষয়টি আমার জানা ছিল। কিন্তু তানভীর আহমেদের বিষয়টি আমরা জানা ছিল না।”
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা