টপ নিউজ ডেস্কঃ কৃমি সব বয়সেরই মানুষের হয়ে থাকে। শিশুদের কৃমি হলে তারা কিন্তু তা বুঝে না, আর প্রকাশও করতে পারে না। শিশুর খাদ্যে অরুচি,ও পাতলা পায়খানা, বমি বমি ভাব, পায়খানার রাস্তায় চুলকানি হলে বুঝতে হবে শিশুর কৃমি হয়েছে।
এ বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী।
বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে গোলকৃমি, ফিতা কৃমি ও গুঁড়া কৃমির প্রাদুর্ভাবই বেশি দেখা যায়। কখনও কখনও গোলকৃমি শিশুর নাক-মুখ দিয়েও বেরিয়ে আসেতে পারে।
আবার এটি শিশুর শ্বাসনালিতেও প্রবেশ করতে পারে। এছাড়াও এটি শিশুর অন্ত্রে বা পিত্তনালিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।এ ফিতা কৃমি শিশুর অন্ত্রে লেগে থেকে রক্তপাত ঘটায়। আর তাতেই শিশু ধীরে ধীরে রক্তশূন্য হয়ে পড়ে। এই পায়খানার রাস্তায় চুলকানির জন্য গুঁড়া কৃমি দায়ী।
কৃমির কারণেই শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়। কৃমি অন্ত্রে রক্তপাত ঘটিয়ে একদিকে শিশুকে যেমন রক্তশূন্য করে আবার অন্যদিকে অন্ত্রে পুষ্টি উপাদানের পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে ডায়রিয়া ঘটায়।
এভাবেই দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ফলে শিশুর খাদ্যে অরুচি হয় এবং সে ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। এতেকরে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
অস্বাস্থ্যকর টয়লেটের ব্যবস্থা, অপরিষ্কার ঘরবাড়ি, দূষিত পানি ব্যবহার করলে, টয়লেট শেষে ভালোভাবে হাত না ধোয়া, খাবার তৈরি বা খাওয়ার আগে হাত পরিষ্কার না করলে, হাতের নখ বড় রাখা, দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস থাকলে ইত্যাদির মাধ্যমে কৃমি হয় এবং এতে করোনাভাইরাসও ছড়ায়।
চিকিৎসা
কৃমির চিকিৎসায় সাধারণত Albendayole বা Mebendayole অথবা Pyrental pamoate দেওয়া হয়ে থাকে। আমাদের দেশে বছরে দুইবার জাতীয় টিকা দিবস পোলিও টিকার পাশাপাশি এক বছর থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের কৃমিনাশক ঔষধ (Albendyaole) খাওয়ানো হয়।
প্রতিরোধ
* গৃহস্থালির কাজে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করতেই হবে।
* অবশ্যই স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
* খাবারের আগে এবং টয়লেটের পরে নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
* শিশুদের হাতের নখ বড় রাখা যাবে না কোনভাবেই এবং দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস পরিহার করতে হবে।
* সময়মতো কৃমিনাশক ওষুধ গ্রহণ করতেই হবে।
* মানুষের অপরিশোধিত মল জমির সার হিসেবে কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না।