শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার হাঁসাড়া ইউনিয়নের কালী কিশোর স্কুল এন্ড কলেজের এক ছাত্র ছাত্রীকে চুম্বন দেওয়ার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধমে ভাইরালের ঘটনায় সালিশ বৈঠক হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবাকে পুজি করে ছাত্রের বাবার কাছ থেকে জরিমানা করা হয়। জরিমানা আদায়ের আংশিক টাকা স্থানীয় দুই সালিশদার ভাগাভাগি করে নেয় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রের বাবা কাদির মিয়া। অপরদিকে ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় ছাত্রীর বাবা শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৯ম শ্রেণির ছাত্র তানভির ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে চুম্বন দেয়ার দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। ৭দিন আগে তার এক সহপাঠী ইমনের ফেইসবুক একাউন্ট থেকে পোষ্ট চুম্বনের দৃশ্যটি ভাইরাল হয়। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ছাত্রীর পরিবার জানতে পারে। এ নিয়ে ঘটনার পরের দিন ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আসাদুল ও শাহিন ওই ছাত্রীর বাবাকে পুঁজি করে তানভিরের বাবা হাঁসাড়ার ঢালী পাড়ার বাসিন্দা কাদিরকে ডেকে এনে সালিশ বৈঠক বসায়।
এ ব্যাপারে ছাত্রীর মা বলেন, ঘটনার পরের দিন তার স্বামীকে ডেকে নেয় তারা। তারা জানায় ফেইসবুক থেকে ওই দৃশ্যটি সরানো হয়েছে। আপনার মেয়েকে আর কাদিরের ছেলে ডিস্টাব করবে না। এর পরেও রাস্তাঘাটে কাদিরের ছেলে ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন ভাবে আমার মেয়েকে ইভটিজিং ও হুমকি ধমকি দিচ্ছে। ছাত্রীর পিতা বলেন, তারা ডাকলে আমি শাহিনের বাড়িতে যাই। উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ সমাধানের জন্য বললে দেখি মূল অপরাধীর বাবা কাদির থাকলেও তার ছেলে নেই। অপরাধীকে ছাড়া আমি বিচারে বসবো না বলে চলে আসি। কাদিরের কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয়েছে কিনা আমি দেখি নাই। তবে লোকমুখে শুনেছি কাদির নাকি জরিমানা দিয়েছে। গত বুধবার রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পুলিশ আসছিল অভিযুক্তদের পায়নি।
এ ব্যাপারে তানভিরের বাবা কাদির জানান, তারা বলছিল ৬০ হাজার টাকা দিলে সমাধান হয়ে যাবে। ওই দিন শাহিনকে ৫ হাজার ও সাবেক মেম্বার আসাদুলকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা দেয়ার জন্য সময় নিয়েছিলাম। পরে বাড়িতে পুলিশ আসার খবর পাই।
শাহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই ছাত্রীর বাবা আমার সম্পর্কে কাকা হন। তাই তাকে ডাকা হয়েছিল। কোন সালিশ বেঠক হয়নি। টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। সাবেক ইউপি সদস্য আসাদুলের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বলতে পারবো না। ছেলের বাবা কাদিরকে আতাহার মাঝিকে ফাঁকে ডেকে নিয়ে কথা বলছে। শাহিন ও আতাহার মাঝিই বলতে পারবে। আমি টাকার নেয়ার বিষয়ে কিছু বলতে পারবো না। আতাহার বলেন, আমাকে তারা ডেকেছে তাই আমি গিয়েছি। টাকা লেনদেনের বিষয়ে তারাই ভালো বলতে পারবে।
এ ব্যাপারে শ্রীনগর থানার এসআই ও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস বলেন, গত (বুধবার) অভিযোগ পেয়েছি। কার আইডি থেকে পোষ্ট করা হয়েছে তা তদন্ত করে বের করে আইনুগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।