সর্বশেষ

37 C
Rajshahi
শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

শ্রীনগরে ভর্তুকিতে নিম্নমানের মাড়াই কলে ধান মাড়াইতে কৃষকের ভোগান্তি

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগরে ভুর্তকির আওতায় নিম্নমানের ধান মাড়াই (পাওয়ার থ্রেসার) কলে কাটা ধান মাড়াইয়ে কৃষক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের প্রদানকৃত নতুন মাড়াই কলগুলো ধান মাড়াই শুরু করার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পার্টসপত্র ভেঙে বিকল হয়ে পড়েছে। এতে করে ভিজা ধান নিয়ে বিপাকে পরেন কৃষক। প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের শ্যালো ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার থ্রেসার যন্ত্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে নি¤œমানের পার্টসপত্র ও অবকাঠামো দিয়ে। কৃষি অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। মাড়াই যন্ত্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান দি মেটাল (প্রাঃ) লিমিটেড যথাযথ সঠিক নিয়মে পার্টসপত্র ব্যবহার করেনি। কোম্পানী তাদের সর্ত ভঙ্গ করেছে। এতে ধান মাড়াই কলের নিম্নমানের হালাকা অবকোঠামো ভেঙে পড়ার পাশাপাশি ও পার্টসপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। কৃষি যন্ত্রগুলো দেখতে এসে সমস্যার সমাধান না করেই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের লোকজন এলাকা থেকে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের।

জানা যায়, শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগীতায় ভর্তুকির আওতায় ৩টি ধান মাড়াই যন্ত্র প্রদান করা হয়। প্রতিটি যন্ত্রের জন্য কৃষকের ৭৮ হাজার টাকা ও বাকি ৫২ হাজার টাকা সরকার ভর্তুকি প্রদান করে। এ আওতায় উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের শহিদুল ইসলাম, বাড়ৈখালী ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম ও ষোলঘর ইউনিয়নের মারফত আলী ১টি করে ধান মাড়াই কল খরিদ করেন।

কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১২ মে কৃষি অফিস ও মাড়াই কল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মাড়াই কল হস্তান্তর করেন। প্রথম দিন ধান মাড়াইকালে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই যন্ত্রের বডি থেকে নাট বল্টু খুলে আসে। ঠিকঠাক করে পুনরায় চালু করি কিছুক্ষণ পরে মাড়াই যন্ত্রটির ফ্যান ও অবকাঠামোর অন্যান্য অংশ ভেঙে যায়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। গত কয়েকদিন আগে সংশ্লিষ্ট মেটাল কারখানার লোকজন এসে ছবি তুলে সটকে পড়ে। মাড়াই কলটি এখন বিকল হয়ে বাড়িতে পড়ে আছে। এ সিজনে যন্ত্রটি চালানোর জন্য ১৫ হাজার টাকায় ১ জন শ্রমিক নিয়েছি। নি¤œমানের মাড়াই কলের কারণে কাটা ধান নিয়ে বিপাকে পড়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছি। বাড়ৈখালী ইউনিয়নের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, মেশিনটি আনার পড়েই ভেঙে যায়। বাধ্য হয়েই স্থানীয়ভাবে ঠিক করি। এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। ধান মাড়াই নিয়ে খুব ঝামেলার মধ্যে আছি। ষোলঘর উমপাড়া এলাকার কৃষক মারফত আলী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, মাড়াই কলের আমি ৮ কানি (প্রতি কানি ১৪০ শতাংশ) ধানের আবাদ করেছি। জমিতে ডুবা ধান কেটে বিকল মাড়াই কলের জন্য ভিজা ধান নষ্ট হচ্ছে। অন্যের মাড়াই কল এনে এ পর্যন্ত ৩শ’ মণের মত ধান মাড়াই করেছি। প্রতিমণ ধান মাড়াই করে ওই মাড়াই যন্ত্র বাবদ ২ কেজি করে ধান দিতে হচ্ছে। তার অভিযোগ মাড়াই যন্ত্রটি দেখতে কোম্পানীর লোকজন পালিয়ে যায়।

ষোলঘর ইউনিয়ন উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মো. জিয়াউর রহমান জানান, খবর পেয়ে আমি একাধিকবার কৃষকের বাড়িতে গিয়েছি। মাড়াই কলগুলোতে নিম্নমানের পার্টসপত্র ব্যবহার করা হয়েছে। দি মেটাল (প্রাঃ) লিমিটেড তাদের শর্ত ভঙ্গ করে ২২ ঘোড়ার শ্যালো ইঞ্জিনের পরিবর্তে ২০ ঘোড়া ইঞ্জিন ও ৫২ কাটার পরিবর্তে ২৫ কাটা ব্যবহার করেছে। হালকা অবকাঠামো ও নিম্নমানের বিভিন্ন পার্টস ব্যবহার করেছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও সারা পাচ্ছিনা। এর আগে বিকল মাড়াই কল দেখতে এসে তারা পালিয়ে যায়।

শ্রীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শান্তনা রানী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles