সর্বশেষ

36.1 C
Rajshahi
বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৮, ২০২৪

সাংবাদিক নেতা সাজ্জাদ হোসেন চিশতির স্বপ্ন টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ভ্রমণ সম্পন্ন

টপ নিউজ ডেস্ক: রবি ঠাকুরের কবিতায় বহু দিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে বহু ব্যয় করি, বহু দেশ ঘুরে দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা,দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শিষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু। রবীন্দ্রনাথের এই কবিতার মত অনেকেই বাইরের দেশে ঘুরতে যান অথচ নিজের দেশের রুপ সৌন্দর্য দেখেন না। কিন্তু মাতৃভূমির রুপ সৌন্দর্য ঠিকই অবলোকন করেছেন সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন চিশতী।ভ্রমণের নেশা তার অনেক আগে থেকে । ঘুরেছেন দেশের বিভিন্ন জেলের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। শুধু তাই নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে ভ্রমণ করেছেন বিশ্বের ২৮ টি দেশ। ব্যক্তি জীবনে মানুষ ছেলেবেলা কাটানোর পর অর্থবিত্ত অর্জনে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। যার কারনে ঐ বয়সে ঘুরাঘুরি করা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয়না। কিন্তু ভ্রমণ পিপাসু সাজ্জাদ হোসেন চিশতি যখনই সুযোগ পান তখনই তিনি ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। কখনো বা সমুদ্রবিলাস, কখনো চন্দ্র বিলাস বা কখনো বৃষ্টি বিলাশ কোন কিছুই বাদ রাখেনি এই ৪০ বছর বয়সে।এবার একটু তার ভ্রমণের ভিন্ন স্বাদ,চ্যালেন্জ ও স্বপ্ন জাগে টেকনাফ টু তেতুলিয়া ভ্রমণের। অনেক কষ্ট সাধন করে একসাথে একটানা ভ্রমণ করে ছুয়ে দেখেছেন এই ভ্রমণের স্বাদ ও সম্ভব করেছেন অসাধ্য। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়ার দূরত্ব ৯২০ কিলোমিটার হলেও সাজ্জাদ হোসেন চিশতির জন্য ছিলো আরও বাড়তি কষ্টের। ঢাকা থেকে মূলত তার সফর শুরু হওয়ায় তাকে ঘুরতে হয়েছে ১৮৫৩ কিলোমিটার। যেখানে ২৩ ঘন্টার পথে সেখানে সময় লেগে যায় ৪৭ ঘন্টা।


কেন তার এই দেশভ্রমণ? সাজ্জাদ হোসেন চিশতি জানান, ‘জীবনের তাগিদে, সময়ের প্রয়োজনে, মানুষের ভালোবাসার খুঁজে, লক্ষ্য অর্জনের জন্য আর ভ্রমণের মাঝে জীবনের সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায় বলেই এই দেশভ্রমণ।’


এই ভিন্ন স্বাদের ভ্রমণ নিয়ে সাজ্জাদ হোসেন চিশতির কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষের বড় হওয়ার নেশা থাকে, টাকার নেশা বা নানা নেশা থাকে আমার বরাবরের মতই ভ্রমণের নেশা।আমার কোন উচ্চা আশা নেই, নেই বদ অভ্যাশ,আছে তীব্র ভ্রমণের নেশা। যখনই সুযোগ পেয়েছি দেশে বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়িয়েছি। এবার একটু মনে হলো চ্যালেন্জিং ও অসাধ্য একটানা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ঘুরে দেখবো। সেই ইচ্ছে থেকে বেরিয়ে পড়ি ঢাকা থেকে। ঢাকা থেকে রওনা হয়ে ঢাকা,গাজীপুর, টাংগাইল, সিরাজগঞ্জে সকালের নাস্তা শেষে, বগুড়া, গাইবান্ধা হয়ে রংপুর গিয়ে দুপুরে খাওয়া,রাত্রি যাপন।তারপর সকালে নাস্তা শেষে আবার ও রওনা,নিলফামারী, লালমনিরহাট হয়ে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া। শুরু হয় যাত্রা তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ। পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও এসে দুপুরের খাওয়া।তারপর দিনাজপুর,জয়পুরহাট হয়ে বগুড়ায় রাত্রি যাপন।সকালে নাস্তা শেষে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ,টাংগাইল, গাজীপুর এসে দুপুরের খাবার।তারপর ঢাকা,নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লায় রাত্রি যাপন। সকালে নাস্তা শেষে ফেনী,নোয়াখালী,চট্টগ্রামে দুপুরের খাওয়া শেষে রওনা, অবশেষে সেই কাংখিত টেকনাফ (কক্সবাজার) এই যাত্রা তেতুলিয়া থেকে টেকনাফ ৯২০ কিলোমিটার ২৩ ঘন্টার জার্নি। কিন্তু যেহেতু আমি ঢাকা থেকে গিয়েছি, আমার লাগলো ১৮৫৩ কিলোমিটার ও ৪৭ ঘন্টা।একসাথে দেখা হলো ১৯ জেলা, ৯২০ কিলোমিটার, ২৩ ঘন্টা।

আমার এ এক বিরল ও অসাধারণ অভিজ্ঞতা হলো। আমার বাংলাদেশের ৬২ জেলা সফর শেষ হলো। আমার এই সফরে ছিল আমার মা আন্জুমান আরা বেগম (৬০), আমার ওয়াইফ জোছনা আক্তার নিশি ও আমার কার্জিন শাহজাহান। আমি জানি না একটানা কতজন এভাবে সফর করেছে।সাজ্জাদ হোসেন চিশতি বলেন,ঘুরে বেড়ানো বা ভ্রমণ মানেই নতুন অভিজ্ঞতার সঞ্চয়। এটা এক ধরণের প্রাপ্তিও বলা চলে। তার মতে, ‘প্রতিটি জেলার মানুষের সাথে মিশতে পারা, তাদের জীবন, সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে কাছ থেকে দেখা, ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞতা অর্জনই আমার প্রাপ্তি।’

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles