সর্বশেষ

35.6 C
Rajshahi
বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

৫ বছরে দাম বেড়েছে ৬৩.৮ টাকা প্রতি লিটারে

সরকারের নির্ধারিত দামের তোয়াক্কা না করেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। চলছে অভিযান, গুনছে জরিমানা, তবু লাগাম আসছে না দামে।

টপ নিউজ ডেস্কঃ সরকারের নির্ধারিত দামের তোয়াক্কা না করেই বাজারে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। চলছে অভিযান, গুনছে জরিমানা, তবু লাগাম আসছে না দামে। কোথাও প্রতি লিটারে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে, আবার কোথাও বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, গত পাঁচ বছরে কাগজে-কলমে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৬৩ টাকা ৮০ পয়সা। ২০২১ সালে দাম বেড়েছিলো প্রায় প্রতি মাসে, বছরে যা ছিল ৫৮ টাকা ১১ পয়সা।

বিবিএসের দেওয়া ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের ভোক্তা মূল্যসূচক বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া যায়। দেশের মূল্যস্ফীতিতেও রয়েছে সয়াবিন তেলের প্রভাব জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

হালনাগাদের এ তথ্যে দেখা যায়, মাছ, মাংস, ব্রয়লার মুরগি, শাক-সবজি, ফল, দুধ, মসলা, দেশি পেঁয়াজ, ছোলা, রসুন, খোলা আটা ও প্যাকেট ময়দা, লবণ, সয়াবিন তেল এবং ফার্মের মুরগির ডিমসহ ৭৪৭টি পণ্যের দাম নিয়ে নিয়মিত মূল্যস্ফীতি প্রকাশ করে বিবিএস।  যার মধ্য থেকে  ৪০০টি আইটেম থেকে প্রতি মাসে মূল্যস্ফীতির হার বের করা হয়।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি মাসে ৪০০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় আইটেম থেকে মূল্যস্ফীতি বের করা হয়। এর মধ্যে সয়াবিন তেলও রয়েছে। কী পরিমাণে ব্যবহার হচ্ছে সে হিসাবও রাখা হয়। আমাদের ৬৪ জেলায় দুটি করে বাজার এবং ঢাকায় ১২টি আউটলেট আছে। ৬৪ জেলা ও ঢাকার ১২টি আউটলেট থেকে এই হিসাব করা হয়।

বিবিএস সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে লিটার  প্রতি সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৯৬ টাকা ৩০ পয়সা যা ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে এসে দাঁড়িয়েছে ১৬০ টাকা ১০ পয়সা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যে আরো দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে তেলবীজ উৎপাদন হয়েছিল মোট ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৮৫৭ মেট্রিক টন। যা ২০১৯-২০ সাল থেকে প্রায় সাড়ে ২৮ হাজার টন বা ৫ শতাংশ বেশি।

আমাদের দেশে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সয়াবিন তেল আমদানি করে। এসকল প্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত সয়াবিন পরিশোধন করার পর বাজারজাত করে। এছাড়া সয়াবীজ আমদানি করে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে তেল বাজারজাত করে আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এভাবে দেশে প্রতি বছর প্রায় ১২-১৩ লাখ টন সয়াবিন তেলের চাহিদা পূরণ করা হয়। তারপরও প্রতি মাসে সয়াবিনের চাহিদা রয়েছে এক লাখ টনের কাছাকাছি, যা রোজায় কিছুটা বেড়ে যায়।

দেশে তেলের দাম বৃদ্ধির মুল কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের কথা বলা হলেও, আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে, তারচেয়ে বেশি হারে দেশে বাড়ানো হয় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

২০১৮ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে দাম বাড়া প্রসঙ্গে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে বেশি তেল উৎপাদন  হয় না। আন্তর্জাতিক বাজারের কারণে তেলের দাম বাড়ছে, বিদেশে বাড়ছে বলেই এটা হচ্ছে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে বেশি বাড়ছে, সেটার জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ করতে পারে।’

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম জানান, সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে বড় আমদানিকারকেরা বেশি প্রভাব ফেলছে কি না তা যাচাই করতে আমরা মাঠে নেমেছি। সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে ডিলার, হোলসেলার ও সাপ্লায়ারদের সবার তথ্য নেওয়া হচ্ছে। তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছি। আমরা বাজারে তথ্য অনুসন্ধানে নেমেছি, যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, যদি প্রমাণিত হয় তাহলে গত তিন বছরে ব্যবসার গড় যে টার্নওভার হয়েছে তার ১ থেকে ১০ শতাংশ জরিমানা করা হবে। আর  যদি আদেশ না মানে তবে ফৌজদারি মামলা করব, সিন্ডিকেটে জড়িত হলে ব্যবস্থা নেবো। আমরা মাঠে নেমে পড়েছি। এবং জানান যে, কেউ অভিযোগ দিলে নাম-ঠিকানা গোপন রেখে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পাদকঃ হাবিবা সুলতানা

উৎসঃ এমওএস/এএ/জিকেএস

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles