বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান প্রশাসনের বিতর্কিত ‘শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৭’ বাতিল করা হয়েছে। একইসাথে, ‘শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০২২’, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।
এ সিদ্ধান্ত বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১৬তম সিন্ডিকেট সভায় হয়েছে বলে সিন্ডিকেট সদস্য ও আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদিকুল ইসলাম সাগর নিশ্চিত করেছেন।
সিন্ডিকেট সভার একটি সূত্র থেকে জানা যায়, শিক্ষক পদে আবেদনের জন্য নতুন এই নীতিমালা অনুসারে একজন প্রার্থীর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলাফল — ন্যূনতম সিজিপিএ-৩.৫ এবং তাকে মেধাক্রমে ১-৭ এর মধ্যে থাকতে হবে।
সূত্রটি থেকে আরও জানা যায়, যদি শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে উপযুক্ত প্রার্থী পাওয়া না যায়, তবে অনুসরণ করা হবে ইউজিসি প্রদত্ত শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা।
২০১৫ সালে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মিজানউদ্দিন-এর সময়ে, একটি শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছিল। উক্ত নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী অনার্স ও মাস্টার্সে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫ প্রাপ্তদের মধ্যে—শুধু প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীরা শিক্ষকের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু ২০১৭ সালে উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহান দায়িত্ব গ্রহণের পর, ২০১৫ সালের এই নীতিমালাটি সংশোধন করেন।
সংশোধিত নীতিমালায়, আবেদনের যোগ্যতা শিথিল করে নতুন শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় — যেটি ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ নীতিমালা-২০১৭’ নামে পরিচিত। এই নীতিমালায়, সব অনুষদের ক্ষেত্রে, প্রথম থেকে সপ্তম স্থান অধিকারীদের আবেদনের বিষয়টি শিথিল করে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এছাড়া আবেদনের ক্ষেত্রে সিজিপিএ নিচে নামিয়ে আনা হয়। এমনকি কিছু অনুষদে আবেদনের যোগ্যতা সিজিপিএ ৩.০০ করা হয়—যা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের শেষ দিকে ইউজিসির পরমার্শক্রমে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার দায়িত্ব গ্রহণের পর, নীতিমালা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুলতান-উল-ইসলামকে আহ্বায়ক ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালামকে সদস্য সচিব করে ১০ সদস্যের একটি ‘নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি’ গঠন করা হয়।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা