টপ নিউজ ডেস্কঃ সুচিত্রা সেন।বাংলা চলচ্চিত্রের প্রভাবশালী নাম। যতদিন অভিনয়ে ছিলেন মাতিয়ে গেছেন সময়টা।বাংলাদেশের পাবনা জেলাতে ১৯২৯ সালে ৬ এপ্রিল এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আজ তার ৯১তম জন্মদিন।
সুচিত্রা সেনের নায়িকা হওয়ার আগে নাম ছিলো রমা দাশগুপ্ত। তার বাবার নাম করুণাময় দাশগুপ্ত ছিলেন স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ১৯৪৭ সালে শিল্পপতি পরিবারের সন্তান দিবানাথ সেনকে বিয়ের সূত্রে কলকাতায় আসেন পাবনার রমা। ১৯৫২ সালে ‘শেষ কোথায়’ ছবির মাধ্যমে রূপালী পর্দায় যাত্রা শুরু করেন।
নায়িকা হয়ে পাবনার রমার নাম বদলে রাখেন সুচিত্রা। পরে তার হাত ধরেই বদলে যায় বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকার সংজ্ঞা। ‘সাত নম্বর কয়েদী’ ছবিতে অভিনয় করার পর সুচিত্রা সেন পিনাকী মুখার্জি পরিচালিত ‘সংকেত’ ছবিতে অভিনয় করেন। তখনও তিনি ‘সুচিত্রা সেন’ নাম ধারণ করেননি। সে নাম আসে এর পরের ছবি অর্থাৎ নীরেন লাহিড়ীর ‘কাজরী’ ছবির মাধ্যমে ১৯৫২ সালে।
সুচিত্রা সেন অভিনীত শেষ ছবি ‘প্রণয় পাশা’ মুক্তি পায় ১৯৭৮ সালে। ওই বছরে সুদীর্ঘ ২৫ বছর অভিনয়ের পর তিনি চলচ্চিত্র থেকে অবসরগ্রহণ করেন।
এই বাঙালি নায়িকার হঠাৎ নীরবতা সম্পর্কে বলা হয়েছে, উত্তমকুমারের মৃত্যুর পরই প্রিয় মানুষটিকে হারানোর অভিমানে চলচ্চিত্র ত্যাগ করেন তিনি। জানা যায়, তার নায়ক উত্তম কুমার ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই মারা যায় সেই রাতে এসেছিলেন একখানি মালা হাতে নিয়ে। মহানায়কের দেহের ওপর মালা রেখে সুচিত্রা সেন ফিরে যান কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের বাড়িতে, এরপর তিনি মিডিয়ার সঙ্গে আর কথা বললেনি।
সুচিত্রা সেন হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেন। তাঁর অভিনীত প্রথম হিন্দি ছবি দেবদাস। এই ছবির জন্য ১৯৫৫ সালের সুচিত্রা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেন। উত্তম কুমারের সাথে বাংলা ছবিতে রোমান্টিকতা সৃষ্টি করার জন্য তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত অভিনেত্রী।
২০০৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের জন্য সুচিত্রা সেন মনোনীত হন, কিন্তু ভারতের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে স্বশরীরে পুরস্কার নিতে দিল্লি যাওয়ায় আপত্তি জানানোর কারণে তাকে পুরস্কার দেওয়া হয় নি। ২০১২ সালে তাকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সর্বোচ্চ সম্মাননা বঙ্গবিভূষণ প্রদান করা হয়।
২০১৪ সালের ১৭ জানুয়ারি কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এ কিংবদন্তি শিল্পীর মৃত্যু হয়।
সম্পাদনায়ঃ মোঃ আব্দুল ওয়াহেদ