সর্বশেষ

31.9 C
Rajshahi
বুধবার, মে ১৫, ২০২৪

রাজশাহীর ১০ প্রার্থী স্কুল পাশ করেননি স্বশিক্ষিত ৬ জন

টপ নিউজ ডেস্ক: রাজশাহীর ৬টি আসনে ৩৮ প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন স্বশিক্ষিত, ৪ জন অষ্টম শ্রেণি, ৩ জন মাধ্যমিক, ৬ জন উচ্চমাধ্যমিক এবং ৫ জন বিএ পাশ প্রার্থী রয়েছেন।আর বাকি ১৪ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ পাশ। এসব তথ্য তাদের হলফনামা থেকে পাওয়া গেছে।

হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী বসির আহমেদ এমএ পাশ করেছেন। হলফনামায় তার পেশা লিখেছেন টিউশনি। বছরে তিনি আয় করেন ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তার হাতে নগদ টাকা আছে ৬ লাখ ৮০ হাজার। এই আসনের এনপিপির প্রার্থী মোসা. নুরুন্নেসা পড়েছেন মাধ্যমিক পর্যন্ত। পেশায় গৃহিণী। তবে নিজের দুই বিঘা জমি থেকে বছরে আয় করেন লাখ টাকা।

রাজশাহী-১ আসনে বিএনএফ মনোনীত প্রার্থী মো. আল আসাদ পেশায় একজন ডাক্তার। রোগী দেখে তিনি বছরে আয় করেন ৪ লাখ ২৬ হাজার টাকা। হাতে নগদ এক লাখ টাকা থাকলেও ১৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা তার ব্যাংকে আছে। এই আসনে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী জামাল খান দুদু আবার স্বশিক্ষিত। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী। বছরে তিনি আয় করেন তিন লাখ টাকা। হাতে নগদ ১ লাখ এবং ব্যাংকে রয়েছে ২ হাজার ৪৩৮ টাকা। বিএনএমের প্রার্থী শামসুজ্জোহা বাবু একজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলী হলেও পেশায় শিক্ষক। পাশাপাশি ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। আর ব্যাংকে আছে ২৫ লাখ টাকা। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী শামসুদ্দিন হচ্ছেন স্বশিক্ষিত। পেশায় ব্যবসাযী। পাশাপাশি কৃষি থেকে আয় করেন ৫০ হাজার টাকা ও ব্যবসা থেকে তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা। নগদ তার কাছে আছে এক লাখ টাকা।

রাজশাহী-২ (সদর) আসনে জাসদের প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সিদ্দিকী শিবলীও একজন স্বশিক্ষিত। পেশা ব্যবসা দেখালেও তা থেকে তার কোনো আয় নেই। কৃষি থেকে বছরে দুই লাখ এবং বাড়ি ভাড়া থেকে তিনি এক লাখ টাকা পান। নিজের নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ২০ হাজার টাকা। সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী ইয়াসির আলিফ বিন হাবিবের শিক্ষাগত যোগ্যতা জানানো হয়েছে এমবিএ। পেশায় একজন কমিশন এজেন্ট। তার বছরে আয়ের নির্দিষ্ট খাত নেই। তবে তিনি তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা। নগদ আছে ১৫ লাখ টাকা। বিএনএমের প্রার্থী কামরুল হাসান একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার। বছরে তিনি আয় করেন তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ আছে এক লাখ টাকা। বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মারুফ শাহরিয়ার বিএ পাশ করেছেন। চাকরি খাত থেকে তিনি আয় দেখিয়েছেন মাত্র আড়াই লাখ টাকা। অবশ্য তার কাছে নগদ টাকা আছে সাড়ে সাত লাখ। এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন হচ্ছেন স্বাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন। পেশায় ব্যবসায়ী। বছরে আয় করেন আড়াই লাখ টাকা।

রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিএনএমের প্রার্থী মতিউর রহমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএ পাশ। পেশা আইন হলেও তা থেকে নেই কোনো আয়। তবে বছরে বিভিন্ন খাত থেকে তিনি আয় করেন চার লাখ টাকা। হাতে নগদ কোনো টাকা নেই। তবে পূবালী ব্যাংকের রাজশাহী শাখায় রয়েছে ১৫ লাখ ৩৩ হাজার ৪২৮ টাকা ঋণ। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুস সালাম খান হলেন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। ব্যবসা থেকে আয় করেন সাড়ে চার লাখ টাকা। হাতে নগদ ৫ লাখ টাকা আছে। স্বশিক্ষিত বজলুর রহমান নির্বাচনের মাঠে আছেন বিএনএফের প্রার্থী হিসাবে। ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন ৫ লাখ টাকা এবং নগদ আছে দুই লাখ টাকা।

এ আসনের আরেক প্রার্থী এনপিপি মনোনীত সইবুর রহমান অষ্টম শ্রেণি পাশ ব্যবসায়ী। বছরে তার আয় এক লাখ টাকা এবং নগদ আছে ১০ হাজার টাকা। জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলাইমান হোসেন হচ্ছেন স্বশিক্ষিত। পেশায় তিনিও ব্যবসায়ী, যা থেকে বছরে আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। পাশাপাশি কৃষি থেকে আয় হয় ৩০ হাজার টাকা। এ আসনে এবারের আওয়ামী লীগের নতুন প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ হচ্ছেন এইচএসসি পাশ। তিনি ঠিকাদারি ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন সাত লাখ টাকা আর মাছ চাষ থেকে আয় করেন আরও ১৮ লাখ টাকা। তার নগদ টাকার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। নিজের নামে আছে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা দামের প্রাইভেটকার এবং এক লাখ ১০ হাজার টাকা মূল্যের একটি শটগান। এছাড়া বারনই আবাসিক প্রকল্পে একটি প্লট ও একটি মাছের খামারে ৩০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে বলে হলফনামাতে উল্লেখ করেছেন।

রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবু তালেক প্রামাণিক পাশ করেছেন উচ্চ মাধ্যমিক। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় হচ্ছে চার লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে নগদ টাকার পরিমাণ জানানো হয়েছে ২২ লাখ ২২ হাজার টাকা। এ আসনে বিএনএমের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম রায়হান পাশ করেছেন অষ্টম শ্রেণি। হলফনামায় পেশা উল্লেখ করেননি। তবে ব্যবসা থেকে তিনি বছরে আট লাখ ৩০ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন। তার হাতে নগদ আছে তিন লাখ টাকা।

এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন আব্দুল ওয়াদুদ দারা। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি। পেশায় তিনি গার্মেন্ট ব্যবসায়ী। তার বছরের কৃষি থেকে আয় ৬ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং নির্ভরশীলদের আয় এক লাখ ২০ হাজার টাকা। শেয়ার/ সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে তার নিজের আয় ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা এবং নির্ভরশীলদের আয় দেখানো হয়েছে তিন লাখ ১৪ হাজার টাকা। এছাড়া কোম্পানির পরিচালক হিসাবে বছরে পারিতোষিক পান ২১ লাখ টাকা। পাশাপাশি পেশা ব্যবসা দেখালেও এ খাত থেকে তিনি সুর্নিদিষ্ট কোনো আয় উল্লেখ করেননি। এছাড়া হাতে নগদ আছে দুই কোটি ২১ লাখ ২৩ হাজার টাকা।

অপরদিকে গণফ্রন্টের প্রার্থী মখলেসুর রহমান পাশ করেছেন বিএ। তিনি পেশায় আইনজীবী। তার বছরে আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ টাকার পরিমাণ দেড় লাখ টাকা। আর জাকের পার্টির প্রার্থী শফিকুল ইসলাম হচ্ছেন অষ্টম শ্রেণি পাশ। পেশা কৃষি। বছরে কৃষি থেকে তিনি আয় করেন দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। নগদ আছে এক লাখ টাকা। এ আসনে বিএনএমের প্রার্থী শরিফুল ইসলাম পাশ করেছেন এমএ। শিক্ষকতা পেশা থেকে তিনি আয় করেন ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা। তার নগদ টাকা রয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনে জাসদের প্রার্থী জুলফিকার মান্নান জামীর শিক্ষাগত যোগতা এমএ পাশ। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। পাশাপাশি নগদ আছে ১২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা। অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুস সামাদ বিএনএমের প্রার্থী। তার নিজের কোনো আয় নেই। তবে তার নির্ভরশীলদের বাৎসরিক আয় দুই লাখ টাকা এবং নগদ টাকা আছে ১৩ লাখ। এসএসসি পাশ করেছেন মহসিন আলী এ আসনে এনপিপির প্রার্থী। ব্যবসা থেকে বছরে তার আয় দুই লাখ টাকা এবং নগদ আছে ৫০ হাজার টাকা। জাতীয় পার্টি প্রার্থী শামসুদ্দিন রিন্টুর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাশ। ব্যবসা পেশা থেকে তিনি বছরে আয় দুই লাখ টাকা। কৃষি থেকেও পান এক লাখ টাকা। নগদ আছে দুই লাখ টাকা। আর জাকের পার্টি প্রার্থী রিপন আলী শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত। মাছ চাষি রিপনের বাৎসরিক আয় তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং নগদ আছে দুই লাখ টাকা। পাশাপাশি মাছ চাষে বিনিয়োগ করেছেন ১৫ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles