নওগাঁ প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র ফারাবি আহমেদ হৃদয় (২০) কে অপহরণের পর হত্যা ও মরদেহ গুমের ঘটনার অন্যতম আসামি শাহীন বাবুকে র্যাব- ৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পে সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছে। শুক্রবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার রামরায়পুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শাহীনকে। জেলার পোরশা উপজেলার ঘাটনগর মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. মুসা আলীর ছেলে গ্রেপ্তার শাহীন।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, গত ০৮ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্র মো. হৃদয় নিখোঁজ হলে আশুলিয়া থানায় জিডি করে তার বাবা ফজলুল মিয়া। এছাড়া তিনি র্যাব-৪ সিপিসি-২ সাভার ক্যাম্প বরাবর দায়ের করেন একটি অভিযোগ। অভিযোগের ভিত্তিতে ১৮ মে আটক করে র্যাব সাভারের গোয়েন্দা দল ময়েজ হোসেন ওরফে পরান (২২) ও মো. সুমন মিয়া ওরফে বাপ্পী নামের দুই অপহরণকারীকে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হৃদয়কে অপহরণের পর হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং নিশ্চিত করেন এই হত্যাকান্ডের অন্যতম আসামি মো. শাহীন বাবু জড়িত থাকার বিষয়টিও।
এরপর অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-৫ জয়পুরহাট ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার মহাদেবপুর উপজেলা থেকে শাহীনকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে শাহীনকে হস্তান্তর করা হয়েছে র্যাব-৪ সিপিসি-২ সাভারে। আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে নিহত হৃদয়। সে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার পরান ও হৃদয় একই এলাকার বাসিন্দা এবং পূর্ব পরিচিত হওয়ায় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল তাদের মধ্যে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও আর্থিকভাবে সচ্ছল ব্যক্তি হৃদয়ের বাবা। আর্থিক সংকটের কারণে পরান ও তার সহযোগী বাপ্পী, শাহীন এবং অপর একজন পলাতক আসামি আকাশ দীর্ঘদিন ধরে হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসামিরা হৃদয়কে আড্ডা দেওয়ার কথা বলে সুকৌশলে আকাশের বাসায় নিয়ে যায় গত ৮ মে বিকেলে।
পরবর্তীতে তারা হৃদয়কে রশি দিয়ে বেঁধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে দাবি করে মুক্তিপণ বাবদ ৫০ লাখ টাকা। আসামিরা দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে হৃদয়কে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে মৃত্যু নিশ্চিত করে তার মুখে বালিশচাপা দিয়ে। তারপর সুকৌশলে ঘটনাস্থল থেকে হৃদয়ের মরদেহ বস্তাবন্দি করে রিকশাযোগে মোজারমেল এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয়। পরে আসামিরা আত্মগোপনের উদ্দেশে অন্যত্র চলে যায় এলাকা ত্যাগ করে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) দুপুর আড়াইটার দিকে আশুলিয়ার মোজারমেলের স্টার্ন হাউজিং এলাকার একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয় ওই কলেজছাত্রের মরদেহ।
সম্পাদনায়: শাহনাজ সাফা