সর্বশেষ

42.1 C
Rajshahi
শনিবার, মে ৪, ২০২৪

আজ ভয়াল ২১ আগস্ট : গ্রেনেড হামলা দিবস

টপ নিউজ ডেস্কঃ আজ ( সোমবার) ভয়াল ২১ আগস্ট। ২০০৪ সালের এই দিনে নৃশংসভাবে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছিল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে। ১৯ বছর আগে সেই ঘটনায় আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতাকর্মী নিহত হন। এতে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনও দলের অনেক নেতা-কর্মী দুঃসহ জীবনযাপন করছেন, যারা ওই হমালায় আহত  হয়েছিলো, তারা গ্রেনেডের স্পিন্টার শরীরে বহন করে। দিনটিকে আওয়ামী লীগ গ্রেনেড হামলা দিবস হিসেবে পালন করে।

সে দিন তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দূর্নীতিবিরোধী সমাবেশ’ ছিল। সমাবেশে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খোলা ট্রাকে নির্মিত উম্মুক্ত মঞ্চে ভাষণ দেন। ভাষণের শেষ দিকে নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মূহুর্তের মধ্যে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় পুরো বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। রাস্তায় পড়ে ছিল আওয়ামী লীগের অসংখ্যা নেতা-কর্মী। তাদের গোঙানি আর কাতর চিৎকারে ভারি হয়ে ওঠেছিল সে দিনের আকাশ-বাতাস। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলার সময় নেতা-কর্মীরা মানবঢাল বানিয়ে রক্ষা করেন। শুধু গ্রেনেড হামলাই নয়, সেদিন শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে চালানো হয় গুলিও। প্রাণে বেঁচে গেলেও তার শ্রবণশক্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এঘনায় প্রাণ হারান আওয়ামী লীগের ২২ জন নেতাকর্মী  এবং গ্রেনেডের স্পিন্টারের আঘাতে আহত হন পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

সে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নিহতরা হলেন: সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভী রহমান, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী ল্যান্স কর্পোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, আওয়ামী লীগ কর্মী রেজিনা বেগম, লিটন মুনশী, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, নাসির উদ্দিন সরদার, আমিনুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, মোয়াজ্জেম, রতন শিকদার, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), হাসিনা মমতাজ রিনা, মোশতাক আহমেদ সেন্টু, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, আবুল কাশেম, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া।

সেদিন আরো আহত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, ওবায়দুল কাদের, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, অ্যাডভোকেট উম্মে রাজিয়া কাজল, এ এম কামাল হোসেন, নাসিমা ফেরদৌস, মাহবুবা পারভীন, শাহিদা তারেক দীপ্তি, রাশেদা আখতার রুমা, হামিদা খানম মনিসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী।

আওয়ামী লীগ ওই ঘটনার জন্য তৎকালীন ক্ষমতাশীন বিএনপির আতাঁতের কথা বলে আসছে। ওই ঘটনার মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে গ্রেনেড হামলার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ানো হয়েছিল। যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। ২০০৭ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ওই হামলার ঘটনায় পুনরায় তদন্ত হয়। সেই তদন্তে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান এবং তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর নাম বেরিয়ে আসে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে পুনরায় এ মামলার তদন্ত শুরু হয়। দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালে মাননীয় আদালত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায় প্রদান করে। এই দুই মামলার রায়ে মোট ৪৯ জন আসামীর মধ্যে বিজ্ঞ আদালত ১৯ জনের মৃত্যুদন্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন এবং বাকী ১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দিয়েছেন।

সম্পদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles