তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউনিয়ন ইউপির নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। স্কুলে শিক্ষার পরিবেশ নেই। সরোজমিন স্কুল পরিদর্শন না করেই আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্কুল এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯২ সালে কোনো সম্ভব্যতা যাচাই না করেই কতিপয় রাজনৈতিক নেতার ইচ্ছে পূরণের জন্য রাজনৈতিক বিবেচনায় নারায়ণপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিগত ১৯৯৭ সালে স্কুলটি এমপিওভুক্ত করা হয়। কিন্তু স্কুল এমপিওভুক্ত করণে তেমন কোনো শর্তই পূরণ করা হয়নি। স্কুলে শিক্ষক রয়েছেন ১১ জন ও কর্মচারী রয়েছে ৫ জন, বিজ্ঞান শিক্ষকের পদ শূণ্য রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সম্প্রতি কম্পিউটার ও বিজ্ঞান ক্লাশ করানো, বিজ্ঞানার, লাইব্রেরি ও ফ্যানের দাবিতে শিক্ষার্থীরা অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করেছিল। সহকারী এক শিক্ষক বলেন, কদিন আগেই কর্মচারী নিয়োগে স্কুলের উন্নয়নে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ডোনেশান নেওয়া হয় এবং স্কুলে উন্নয়নের জন্য প্রধান শিক্ষককে ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। কিন্তু স্কুলের উন্নয়নে একটি টাকাও ব্যয় করা হয়নি।
এদিকে ৩০ জুলাই রোববার স্থানীয় অভিভাবক মহলের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন স্কুলের করুণ চিত্র উঠে এসেছে। স্কুলের খেলার মাঠ নাই, কমনরুম, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ল্যাব, লাইব্রেরী ও বঙ্গবন্ধু কর্নার নাই। নাই একাডেমিক ভবন। বেড়া টাটির ঘরে টিনের ছাপরা, নাই ফ্যান এ যেনো ভাগাড়। প্রচন্ড গরমে ক্লাশ করতে হয় বলে শিক্ষার্থীরা আসেন না। আবার শিক্ষকেরা সৃজনশীল বোঝে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, স্কুলের কম্পিউটার নষ্ট, শিক্ষক কম্পিউটার চালাতে পারে না, ফলে ক্লাশ নেয়া হয় না, তবে শিক্ষক নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করেন। নাই বিজ্ঞানাগার ও বিজ্ঞান শিক্ষক। লাইব্রেরি আছে ঘর ও বই নাই,তিনিও নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করছেন।
সহকারি শিক্ষক আব্দুল হালিম বলেন, কম্পিউটার শিক্ষক মুঞ্জুয়ারা হলেন বিএনপি নেতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান হেনার স্ত্রী। তার বাড়ির পাশে স্কুল বলে তাকে কেউ কিছু বলতে পারে না। তিনি বলেন, যেখানে কম্পিউটার চলে না, সেখানে কম্পিউটার শিক্ষক রাখার মানে হয় না। এর মানে সরকারের বিপুল অর্থ অপচয় ছাড়া কিছু নয়।
অন্যদিকে স্কুলের ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রোমান আলী, সিয়াম আলী ও তুহিন বলেন, তাদের স্কুলে কখানো কম্পিউটার ক্লাশ হয় না। তারা বিজ্ঞান শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। এমনকি গরমে ক্লাশ করতে পারেন না, ফ্যানের কথা বললে হেড স্যার বকাঝকা করেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ফ্যান নাই কিনে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, নিয়োগ কিভাবে হয়, কারা টাকা নেয় সেটা সবাই জানেন। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুলের সভাপতি কাওসার আলী বলেন, তিনি নামেমাত্র সভাপতি। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা