নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে সন্ত্রাসী হামলায় পরিবারের প্রবীন ব্যক্তিসহ অন্যান্য সদস্যদের আহত ও প্রাণনাশের চেষ্টার ঘটনায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা। ২৩ এপ্রিল (শনিবার) বেলা ১১ টায় নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল পূবালী মার্কেটের দোতলায় রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে গুরুতর আহত, ভূক্তভোগী, সাবেক পুলিশ সদস্য সাদরুল হোসেনের বড় ছেলে মাজাহারুল ইসলাম জুয়েল(৩৯) বলেন, আমাদের বাড়ি পবা উপজেলার সবসার গ্রামে। গত ১৫ এপ্রিল দুপুরে গ্রামের সাঁকোপাড়া জামে মসজিদের ভিতরে রাজনৈতিক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষরা আমাকে নিয়ে উস্কানীমূলক নানা বক্তব্য প্রদান করেন। আমি সেসময় উক্ত ঘটনার প্রতিবাদ করি। উপস্থিত মুসল্লিরা ঘটনা মিটিয়ে য়ে এবং প্রতিপক্ষকে বসিয়ে দেন। প্রতিপক্ষরা ছিলেন পবা উপজেলার সবসার গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে সুলতান আলী (৫০) এবং আলম (৫৫), মৃত জয়নুদ্দিনের ছেলে লতিফ এবং মোমিন, মৃত আয়জুদ্দিনের ছেলে কাওসার আলী (৫৫), মৃত আরমান আলীর ছেলে রবিউল ইসলাম (৫০), মৃত জহির উদ্দিনের ছেলে কামরুল (৩৮), মৃত জসিমের ছেলে সবুজ, আলম ও রিপন।
ভুক্তভোগী পরিবার বলেন, এরই জের ধরে ২২ এপ্রিল(শুক্রবার) দুপুর আনুমানিক ০২.২০ টার সময় সাঁকোপাড়া জামে মসজিদে পবিত্র জুম্মার নামাজ শেষে আমি আমার নিজ বাড়ি যাওয়ার পথে পবা থানাধীন সবসার সাঁকোপাড়া গ্রামের এনামুলের চায়ের দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছানো মাত্রই উল্লেখিত প্রতিপক্ষ বেআইনী লোকজন নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে আমার পথ রোধ করে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে শুরু করে। গালিগালাজ করার কারণ জানতে চাওয়া মাত্রই প্রতিপক্ষরা এলোপাথাড়িভাবে আমাকে কিলঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলাফোলা জখম করে। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করলে আমি বাড়িতে চলে আসি
কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরে আনুমানিক দুপুর ২.৪০ টায় যখন বড়গাছী হাট জামে মসজিদ হতে নামাজ শেষে আমার পিতা সাবেক পুলিশ সদস্য মোঃ সাদরুল হোসেন বাড়িতে আসছিলেন, তখন পথে সবসার সাঁকোপাড়া মোড়ে এনামুলের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছানো মাত্রই সকল প্রতিপক্ষ আমার পিতার পথ রোধ করে ধারালো চাপ্পড় দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার পিতার বাম চোখের উপরে কপালে সজোরে আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। আমার পিতা মাটিতে পড়ে গেলে অন্যান্য বিবাদীগণ তাদের হাতে থাকা ধারালো চাপাতি, লোহার বড়, হাতুড়ি, বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে মারপিট করে আমার পিতার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতবিক্ষত করে। আমার পিতার চিৎকারে আমার চাচা রেজাউল করিম(৪৮) আমার পিতাকে উদ্ধার করার জন্য এগিয়ে গেলে তাকেও হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড দিয়ে সজোরে আঘাত করে জখম করে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজশাহীর ০৮ নং ওয়ার্ডে আমার পিতা এবং ৩১নং ওয়ার্ডে আমার চাচাকে ভর্তি করেন।
মোবাইলফোনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আমি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।এরপরে রাতে পবা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি।– বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান ভুক্তভোগী পরিবার। ভুক্তভোগী পরিবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানায়।
এই বিষয়ে পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ হোসেন বলেন, এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়ে গেছে, মামলা গ্রহন করা হবে; আসামী গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা