সর্বশেষ

29.5 C
Rajshahi
বৃহস্পতিবার, মে ২, ২০২৪

রাজশাহীতে বিএমডিএর কর্মকর্তা দ্বারা সাংবাদিক লাঞ্চিত

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ রাজশাহীতে সংবাদ সংগ্রহের সময় এটিএন নিউজের রাজশাহী প্রতিনিধি বুলবুল হাবিব ও ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলামের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর আমবাগান এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

বিএমডিএর সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, বুলবুল হাবিব ও রুবেল সরকার নির্ধারিত নতুন সময়ে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে আসছেন কি না, সে সম্পর্কে সংবাদ সংগ্রহ করছিলেন। এসময় প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশীদ তাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরণ করে। এর কিছুক্ষন পর বুলবুল হাবিব লাইভ এর প্রস্তুতি নেয়ার সময় আব্দুর রশীদের নির্দেশে এবং জাহিদের নেতেৃত্বে কর্মচারীরা হামলা করে।

এতে গুরুত্বর আহত হন ক্যামেরাপার্সন রুবেল ইসলাম ও বুলবুল হাবীব। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ডে ভর্তি করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছে, রুবেলের কানের পর্দা ফেটেছে। কানের ভেতর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।

হামলার শিকার বুলবুল হাবিব সংবাদ কর্মীদের জানান, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সকাল ৮টায় অফিস শুরু হবার কথা। সেই নির্দেশনা কতটুকু কার্যকর হয়েছে সেটির খোঁজ-খবর নিতে সকালে তারা বিএমডিএ কার‌্যালয়ে যান। সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক (ইডি) আব্দুর রশিদ অফিসে প্রবেশ করেন। এর পরপরই তিনি সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। বিনা অনুমতিতে কেন প্রবেশ করেছে এবং কেন ছবি তুলছে এই নিয়ে উত্তেজিত হয়ে উঠেন তিনি।

বুলবুল আরও বলেন, ‘এক পর্যায়ে দ্বিতীয় তলায় তার দপ্তরে উঠে যান। কিছুক্ষণ পরে ৮ থেকে ১০ জন লোক আমাদের ঘিরে ধরে। আমাদের উপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায় এবং ক্যামেরা ও এটিএন নিউজের বুম ভেঙে ফেলে। তাদের হামলায় আমার ক্যামেরাম্যান রুবেল গুরুতর আহত হয়। রুবেলের শক্ত কোনো কিছু দিয়ে তারা জোরে আঘাত করে। বর্তমানে তার অবস্থা গুরুতর। এমন অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ৩৩ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হবে।’

এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের ঘটনার রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে।

এসময় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান শ্যামল বলেন, ‘পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমাদের সহকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বিএমডিএর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে আমার সহকর্মীর ওপর এই হামলা চালানো হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেই সাথে হামলার সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’

রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের (আরইউজে) সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সহকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে বিএমডিএ কর্মকর্তা-কর্মচারিরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি হরণ করেছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনে তারা শুধু বাধাই দেয়নি। তাদের ওপর হামলা চালিয়ে বিএমডিএ কার্যালয়ের সামনে থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। অকথ্য ভাষায় করা হয়েছে গালাগাল। ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি অনতিবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। অন্যথায় বিএমডিএ’র বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’

সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় একাধিক বার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ ফোন রিসিভ করেননি।

আর বিএমডির চেয়ারম্যান আখতার জাহানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অন্য একজন ফোন রিসিভ করে বলেন, ‘ম্যাডাম  দপ্তরে মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।’

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles