টপ নিউজ ডেস্কঃ গুজরাটের শাসক মাহমুদ বেগদা, যিনি মাহমুদ শাহ প্রথম নামেও পরিচিত। তার সম্পর্কে খুব কম লোকই শুনেছেন, কিন্তু দীর্ঘ ৫৩ বছর গুজরাটে রাজত্ব করেছিলেন। মাহমুদ বেগদা প্রচন্ড দৈহিক শক্তিসম্পন্ন একজন বলিষ্ঠ মানুষ ছিলেন। যেমন বলবান তিনি ছিলেন তেমনি ছিল তার ক্ষুধা। সত্যি বলথে তিনি একজন ভোজনরসিক মানুষ ছিলেন এবং প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে খাবার খেতেন।
তিনি কেবল সকালের নাস্তায় এক কাপ মধু এবং একশ পঞ্চাশটি সোনালী কলাসহ পরিষ্কার মাখন খেতেন। পার্সিয়ান ক্রনিকলার এবং বারবোসা ও ভার্থেমার মতো ইউরোপীয় ভ্রমণকারীরা উল্লেখ করেছেন যে সম্রাটের একটি বিশাল ক্ষুধা ছিল। তার প্রতিদিনের খাবারের ওজন প্রায় ৩৫-৩৭ কেজি!
এই ৩৫ কেজি খাবারের তিনি খেতেন পাঁচ সের শুকনো চালের তৈরি মিষ্টান্ন। তারপরও দিনশেষে রাতের ঘুমানোর সময়ও তিনি ক্ষুধার্ত হতে পারেন কিংবা ক্ষুধা অনুভব করতে পারেন। তাই তার বিছানার দুপাশে দুটি বিশাল থালা ভর্তি মাংসের সিঙ্গারা রাখা হতো, যেন তিনি রাতে ক্ষুধা লাগলে সেগুলি খেতে পারেন।
শুধু তাই নয়, প্রচুর খাবারের সাথে অল্প একটু বিষও তিনি প্রতিদিন খেতেন খাবারের সাথে। দর্শক রূপক অর্থে নয়, আমি বলছি সত্যিকারের বিষের কথা। এবং কেউ তাকে লুকিয়ে এ বিষ খাওয়াতো না বরং তিনি নিজেই হুকুম দিয়েছিলেন প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় তার খাবারে বিষ মিশাতে। ইউরোপীয় ইতিহাসবিদ বারবোসা এবং ভার্থেমার মতে, একবার সুলতানকে বিষ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সে যাত্রায় তিনি বেঁচে গেলেও এরপর থেকে তিনি প্রতিদিন অল্প পরিমাণে বিষ খাবার হিসেবে গ্রহণ করতেন যেন এটি তার শরীরকে বিষ প্রতিরোধক তৈরি করে। কথিত আছে যে, তার ফেলে দেওয়া জামাকাপড় কেউ স্পর্শ করতো না, কারন সেগুলো বিষাক্ত হয়ে গেছে বলে ধারণা করা হতো এবং সেগুলো পুডড়িয়ে ফেলা হতো!
সুলতানের এই বিষ খাওয়ার গল্প বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়েছে। যারা সপ্তদশ শতাব্দীর স্যামুয়েল বাটলারের ব্যঙ্গাত্মক ‘হুডিব্রাস’- “দ্য প্রিন্স অফ ক্যাম্বে’স ডেইলি ফুড ইজ এএসপি এবং ব্যাসিলিস্ক ও টোড” পড়েছেন তারা বুঝতে পারবেন রাজপুত্রটি আসলে কে!
দর্শক মাহমুদ শাহ্ নিজেও তার প্রচন্ড ক্ষুধা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তিনি বলতেন, “আল্লাহ না থাকলে? আর তিনি যদি গুজরাটের উপর তার শাসন না দিতো তাহলে কে তার এই ক্ষুধা মেটাতো?”
সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা