সর্বশেষ

43.9 C
Rajshahi
শুক্রবার, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

শ্রীনগরে নকশার বাহিরে মালিকানা জমির ওপরে রাস্তা নির্মাণ, প্রতিকার পাচ্ছেনা ভুক্তভোগীরা

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি: শ্রীনগরে রেকর্ডকৃত নকশার বাহিরে মালিকানা জমির ওপর দিয়ে পুরো রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃতনকশা অনুযায়ী রাস্তা স্থান্তর করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে সমাধান চেয়েও কোন সমাধান পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বিবন্দী গ্রামের মরহুম মরন শেখের পরিবারের সদস্যরা এই অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিবন্দী-বাগবাড়ি হয়ে তন্তর পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার (এলজিইডি) সড়ক উন্নয়ণ কাজে পিচ ঢালাইয়ের জন্য রাস্তাটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। দেখা যায়, রাস্তাটির বিবন্দী গ্রামের হাজীবাড়ির সামনে প্রায় ৩০ ফুট (বিবন্দী মৌজায় এসএ ৪৫৫নং, আরএস ৭৬৪নং দাগের ১৪০৯নং খতিয়ানে ৩৫ শতাংশ) মালিকানা কৃষি জমির ওপরে রাস্তাটির অবস্থান। অথাৎ দৃশ্যমান রাস্তার দুই ধারে উত্তর-দক্ষিণ পাশে জমির মালিক সিরাজ গং। দক্ষিণ পাশে রাস্তার নয়নজুলীর পরে গিয়ে ওই গ্রামের মরহুম সুখাই শেখের পুত্র সোরহাব শেখ, আক্কাস শেখ গংদের মালিকানা সম্পত্তি। অথচ সোহরাব শেখরা উত্তরে দিকে তাদের সম্পত্তির সীমানা অতিক্রম করে রাস্তার নয়নজুলীর জায়গা মাটি ভরাট করে রাস্তার দক্ষিণ পাশে সিরাজদের অবশিষ্ট জমির জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এনিয়ে গত বছর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মিমাংসায় সমাধান হয়। এতে ধার্য করা হয় সিরাজ গং ১ লাখ টাকা দিলে সোহরাব গং পুর্ব-পশ্চিম দিকে প্রায় (১ গন্ডা, ৭ শতাংশ) ৩০ ফুট জায়গা ছেড়ে দিবে ও নকশা অনুসারে রাস্তা যাবে। এতে দুই পক্ষই তা মেনে নেন। এর মধ্যে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য কাজ শুরু হলে ভুক্তভোগী পরিবারটি রাস্তা সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ধরনা ধরেন। এতে ঠিকাদার প্রথম রাজি হলেও রহস্যজনক কারণে তা করছেন না।

অপর একটি সূত্র জানায়, গত ২০০৯ সালের দিকে হালট রাস্তাটির উন্নয়নে মাটি ভরাট করার সময় রাস্তার দক্ষিণ পাশে মাটি না থাকায় সংশ্লিষ্টদের ইচ্ছেমত রহস্যজনক কারণে এক তরফাভাবে সিরাজদের জমির ওপর নেয়া হয়। অস্বচ্ছল পরিবারটি প্রতিবাদ করেও এর প্রতিকার পায়নি।

ভুক্তভোগী সিরাজ শেখ (৫০), আসলাম শেখ (৪০) ও তার বৃদ্ধা মা সোহুরা বেগম (৭০) কান্নাজরিত কন্ঠে বলেন, একযুগ ধরে এনিয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গিয়ে প্রতিকার চেয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান সাহেবসহ অনেকেই সমাধানের জন্য রায় দেন সোহরাবদের বালু ভরাটের ১ লাখ টাকা দিলে তারা জায়গা ছেড়ে দেবেন। আমরা ১৫ দিনের সময় নিয়ে টাকা যোগার করতে পারিনি। একবছর পরে রাস্তা পাকা হচ্ছে দেখে অনেক কষ্ট করে ৫০ হাজার টাকা যোগার করে স্থানীয় মেম্বারের কাছে জমা করি। রাস্তা স্থান্তর হলে বাকি টাকা দিবো। অথচ এর কোন প্রতিকার পাচ্ছিনা। সোহরাব, আক্কাস ও ওহাব শেখ বলেন, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা যা করবেন আমরা তা মেনে নেবো। যদি দোকান ভেঙে দিতে বলে তাহলে তাৎক্ষণিক ভেঙে ফেলবো।

কুকুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু দেশের বাহিরে থাকার কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক বছর আগে এ ব্যাপারে বসা হয়েছিল। রাস্তার জায়গায় রাস্তা যাবে। বিনিময়ে সোবরারদের গংদের ১ লাখ টাকা দিবে সিরাজ গং বিনিময়ে সোহরা গং স্থাপনা সরিয়ে নিবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাইয়ুম মিন্টু জানান, সরকারি নকশা অনুসারে রাস্তা গেলে সমস্যা সমাধান হবে। মাটি ভরাটের টাকা সোহরাব গং পাবে। সংশ্লিষ্ট সবাই যদি সহযোগীতা করেন তাহলে সমস্যার সমাধান হবে। এলাকাবাসীও চাচ্ছেন অসহায় পরিবারটি এর প্রতিকার পাক।

ঠিকাদার আবুল কালাম কানন জানান, ইঞ্জিনিয়ার যেভাবে আমাকে কাজ করতে বলবে আমি সেভাবে কাজ করবো।

রাস্তার কাজে তদারকীর দায়িত্বে থাকা শ্রীনগর উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. শরিফুল ইসলাম এ ব্যাপারে জানান, আমি সরেজমিনে যাবো। তার পরেও এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা চাইলে এ বিষয়ে সমাধান করতে পারেন।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles