টপ নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত তিন মাসে সর্বোচ্চ ৫৬টি গুজব ছড়ানো হয়েছে। এরপরই বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী বেশি গুজবের শিকার হয়েছে। আর এ কাজে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউব প্ল্যাটফর্মব্যবহার করা হয়েছে। যদিও এ প্রতিষ্ঠান দুটি মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছিল নির্বাচনি গুজব ঠেকাতে।
এসব তথ্য রিউমর স্ক্যানার প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকের মাসভিত্তিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংখ্যার দিক থেকে চিহ্নিত করা গেছে ডিসেম্বরে ২১৫টি, নভেম্বরে ১৭৫টি, অক্টোবরে ২১০টিসহ মোট ৬০০টি গুজবের ঘটনা।যদিও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ গত ডিসেম্বরে জানায়, তাদের ৪০ হাজার কর্মী কাজ করছেন বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নির্বাচন সংক্রান্ত মিথ্যা কিংবা উসকানিমূলক কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণে। ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা গত ২৮ নভেম্বর নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট যেকোনও তথ্যের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্বের বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশগুলোর নির্বাচন নিয়ে পলিসি ঘোষণা করে । বিটিআরসি বলছে, গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে নির্বাচন নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয় ফেসবুক, টিকটক ও গুগলের সঙ্গে বৈঠক করে। প্রতিষ্ঠানগুলো তাতে সাড়া দিয়েছে।
রিউমর স্ক্যানার চিহ্নিত করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে গুজব ছড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশকে নিয়ে ২৪টি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালকে নিয়ে ১৮টি, কূটনীতিক, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকে উদ্ধৃত করে ১৭টি গুজব। জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক গুজব মোট রাজনৈতিক গুজবের ৮৩.৭০ শতাংশ।
রিউমর স্ক্যানার অক্টোবরে রাজনীতি বিষয়ক ৮৪টি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এর মধ্যে ৬৫টি নির্বাচনকে জড়িয়ে ছিল। ৭৬টি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন ছিল নভেম্বরে প্রতিষ্ঠানটির রাজনীতি বিষয়ক। এর মধ্যে ৬৬টি ছিল নির্বাচনকে জড়িয়ে। সর্বশেষ ডিসেম্বরে তাদের ১১০টি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন রাজনীতি বিষয়ক। এর মধ্যে ৯৫টি ছিল নির্বাচনকে জড়িয়ে।
রিউমর স্ক্যানারের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র গত তিন মাসে সর্বোচ্চ ৫৬টি গুজব ছড়ানো হয়েছে। এর বিপরীতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে ৭টি গুজব ছড়ানো হয়েছে, ৬টি গুজব বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে জড়িয়ে, ৪টি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে নিয়ে, ৪টি গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুরকে নিয়ে, ৩টি বিএনপি নেত্রী রুমিন ফারহানাকে নিয়ে ও ৩টি বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে নিয়ে, ৩টি গুজব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নিয়ে ছড়ানো হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের হেড অব অপারেশন্স সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনকেন্দ্রিক গুজবের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। অক্টোবর মাসে ভুয়া ফটোকার্ডের আধিক্য থাকলেও ডিসেম্বর মাসে এসে পরিলক্ষিত হয়েছে ভুয়া শিরোনাম ও থাম্বনেইল সংবলিত ভিডিও’র আধিক্য।’
সম্পাদনায়: তৌহিদ হাসান