টপ নিউজ ডেক্স: কর্মস্থল, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন, বিমানবন্দর, শপিংমল সহ সকল জনবহুল স্থানে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর নিরাপদ পরিবেশ সম্বলিত ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেছে।
৯ মাস বয়সী শিশু উমাইর বিন সাদী ও তার মায়ের এর দায়ের করা রিটের শুনানি শেষে এ যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেন রোববার (২ এপ্রিল) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী এবাদত হোসাইন এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের রিট বেঞ্চ ।
অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তানজিলা রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান শুনানি করেন।
এর আগে ৯ মাস বয়সের ছোট্ট শিশু উমাইর বিন সাদী বিগত ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর নিরাপদে মায়ের বুকের দুধ পানের পরিবেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করে ।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৭ অক্টোবর বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার মো. দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জনস্বার্থে করা এই রিটের রুল জারি করেন। নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, বিমান ও পর্যটন সচিবসহ ১৭ জন বিবাদীকে বলা হয়েছিল রুলের জবাব দিতে।
পরবর্তীতে বিগত ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রাহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের দ্বৈত বেঞ্চ সারা দেশের কলকারখানা ও মিলগুলোতে ২ মাসের মধ্যে ব্রেস্টফিডিং রুম স্থাপনের নির্দেশ দেয়।
রিটে বলা হয়েছে, এমন পরিবেশে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপন করতে হবে যেখানে কোনো অস্বস্তি বোধ করবে না বা যৌন হয়রানির শিকার হবে না কোন মা সন্তানকে বুকের দুধ পান করাতে । সেটা নিশ্চিত করতে হবে কর্তৃপক্ষকে।
বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে এই প্রথম নয় মাস বয়সী কোনো শিশু পিটিশনার হয়েছে। দীর্ঘ আইনি লড়াই শেষে প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর আজ হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ যুগান্তকারী রায় ঘোষণা করেন রিটের পূর্ণাঙ্গ শুনানি শেষে।
এই রিটের ফলশ্রুতিতে দেশের সবগুলো বিমান বন্দর, রেল স্টেশনসহ ইতোমধ্যে ব্রেস্টফিডিং রুম স্থাপিত হয়েছে সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে বলে আদালতে জানিয়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সারা বিশ্বের জন্য একটা উদাহরণ সৃষ্টি করবে সকল জনবহুল স্থানে শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর নিরাপদ পরিবেশ সম্বলিত ব্রেস্ট ফিডিং রুম ও বেবি কেয়ার কর্নার স্থাপন সম্পন্ন হলে যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের জন্য অনুসরণীয় হবে।
সম্পাদনায়: শাহনাজ সাফা