সর্বশেষ

43.8 C
Rajshahi
সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

প্রভাষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর মান্দা উপজেলার মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট কলেজের প্রভাষক নিয়োগ বিধি মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানান, ১০ বছর চাকুরির অভিজ্ঞতা না থাকায় অবৈধ নিয়োগ পাওয়ায় অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ও বিএম শাখায় কাম্য শিক্ষার্থী না থাকায় এবং ভোকেশনাল শাখার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শাখার জাল সনদপত্র হাইকোর্টের রিটের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। গত ১৯ অক্টোবর দুপুরে উক্ত বিষয়ে সরেজমিনে যাচাই-বাছাইপূর্বক তদন্ত শুরু করেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর এর সহকারি পরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা ড.রেজা হাসান মাহমুদ।

অভিযোগ ও হাইকোর্টের রিটের সূত্রে জানা যায়, গত এক যুগ ধরে অধ্যক্ষ রমজান আলীর অবৈধ নিয়োগ বাতিলসহ অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ এবং হাইকোর্টে রিট করেন নওগাঁর মান্দা উপজেলা এলাকার সচেতন ব্যক্তি আব্দুল জলিল। এর প্রেক্ষিতে পত্র প্রাপ্তির ত্রিশ (৩০) কার্য দিবসের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ।

এছাড়াও নিজের নিয়োগ বোর্ডে অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০০৯ সালের ১ আগস্ট এ বিষয়ে সরজমিনে তদন্ত করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (সাঃ প্রাঃ) কেএম কায়সার আলী। তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার মঙ্গলবাড়ী ময়েজ মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে সমাজ বিজ্ঞানে ১৯৯৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর প্রভাষক পদে অধ্যক্ষ রমজান আলী যোগদান করেন। ১৯৯৫ সালের ১ মে তিনি উক্ত কলেজে এমপিওভূক্ত হন। সেখানে চাকরিরত অবস্থায় ১৯৯৮ সালে তিনি “মান্দা বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট” নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেন। এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নিয়োগ কমিটির ১৯৯৮ সালের ৭ অক্টোবরের সভা ও ১৯৯৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর নিয়োগ অনুমোদনের সভায় অধ্যক্ষ হিসেবে তিনি নিজেই সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তাঁর ১০ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা ছিল না। এরপর ২০০০ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি এই প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। মাউশি’র সহকারী পরিচালক কেএম কায়সার আলীর তদন্ত প্রতিবেদনে অধ্যক্ষ পদে রমজান আলীর অবৈধভাবে নিয়োগ, এছাড়াও দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি ও বেতন ভাতার সরকারি অংশের টাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন অনিয়ম উঠে আসে। এসব বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়। কিন্তু প্রায় ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও অধ্যক্ষ্য রমজান আলী সাকিদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এছাড়াও প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পরিষদের সদস্য তার নিজ পরিবারের হওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে অত্র প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক কর্মচারী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষক জানান, কোন অনিয়ম নিয়ে কথা বললে বেতন বন্ধ করে দেওয়া, চাকুরী থেকে অব্যাহতিসহ নানা হুমকি শুনতে হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নজিরও পাওয়া যায়। প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে উপরে কর্তৃপক্ষকে ঠিক রাখতে বিভিন্ন সময় বেতন থেকে পর্যাপ্ত টাকা কর্তন করে নিলেও কেউ কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। কেননা পরিবারের অনেক সদস্য এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।

জানা যায়, তিনি চতুর্থ শ্রেণীর এমন কর্মচারী নিয়োগ দেন, কোন কাজ না করেও বেতন উত্তোলন করে। কেউ কোন সমস্যাই পড়লে বিনা টাকায় উদ্ধার করেন না সমস্যা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে হয়। এ ব্যাপারে (কম্পিউটার) পরিদর্শক শাখায় জাল সনদপত্র বিষয়ে জানতে চাইলে রঞ্জিত কুমার বলেন, আমার কাছে যে আসল সনদপত্রটি ছিল। সেটি দপ্তরে জমা না দিয়ে প্রিন্সিপাল অন্য একটি জাল এবং ভুয়া সনদপত্র জমা দেন। আমাকে নিয়ে যত সমস্যা কোন কোন ট্রেডে শিক্ষার্থী নাই, বেতন উঠতিছে কারো কোন কথা নাই।

এ ব্যাপারে (কম্পিউটার) ইন্সটাক্টর জাল সনদপত্র বিষয়ে  খায়রুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে, তিনি কিছু না বলে বাসায় চলে যান। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ রমজান আলী সাকিদার বলেন, আমি মনে করি আজকের এই তদন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আব্দুল জলিল নামে যে হাইকোর্টে রিট করেছেন। তার কোন ঠিকানা নেই। শুধু মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে। তবে কে এই জলিল তার বিরুদ্ধে আমরা আইনের ব্যবস্থা নিব। নিজের অনিয়ম নিয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানান।

এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা ডঃ রেজা হাসান মাহমুদ বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাচ্ছি না। তবে অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। আইন তার নিজ গতিতে চলবে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

সম্পাদনায়ঃ হাবিবা সুলতানা

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles